হরিন্দর বাওয়েজা
আচমকা কোনও পদক্ষেপ নয়। বরং কমপক্ষে পাঁচ মাসে আগে তিরুবন্তপুরমের সাংসদ শশী থারুর একটি নৈশভোজের আসরে সলতে পাকানোর কাজটা শুরু হয়েছিল। তারই ফলস্বরূপ দলের অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি সোনিয়া গান্ধীকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন ২৩ জন কংগ্রেস নেতা। ‘হিন্দুস্তান টাইমস’-কে এমনটাই জানিয়েছেন সেই নৈশভোজে আমন্ত্রিত কংগ্রেস নেতারা।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে সেই নৈশভোজে আমন্ত্রিত কয়েকজন কংগ্রেস নেতা চিঠিতে স্বাক্ষর করেননি। সেই তালিকায় আছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদম্বরম ও তাঁর ছেলে কার্তি, সচিন পাইলট, অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি এবং মণিশংকর আইয়ার। ‘সক্রিয়’ এবং ‘দৃশ্যমান’ নেতার দাবি জানিয়ে গত ৭ অগস্ট যে চিঠি সোনিয়ার কাছে পাঠানো হয়েছিল।
সেই নৈশভোজে থাকার কথা স্বীকার করেছেন সিঙ্ঘভি। রাজ্যসভার সাংসদ বলেন, ‘একদিন আগে আমায় শশী থারুর নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। দলের মধ্যে সংস্কার সংক্রান্ত গঠনমূলক বিষয়গুলি নিয়ে ঘরোয়াভাবে আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু কোনও পর্যায়েই চিঠি পাঠানোর বিষয়টি আমায় জানানো হয়নি।’
সিঙ্ঘভির সুরেই কথা বলেছেন আইয়ার। তিনি বলেন, ‘আমি (চিঠিতে) সই করিনি, কারণ আমায় কেউ বলেননি। কেউ আমায় প্রস্তাব দেননি।' তিনি জানান, নৈশভোজে দলকে ঘুরে দাঁড় করানো নিয়ে ‘সাধারণ’ আলোচনা হয়েছিল। চিঠি পাঠানোর প্রস্তাবও উঠেছিল এবং কেউ তার বিরোধিতা করেননি বলে জানিয়েছেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা।
বাকি কংগ্রেস নেতারা অবশ্য মুখ খুলতে চাননি। চিদম্বরম জানান, ‘দলের বিষয়ে’ তিনি কোনও মন্তব্য করতে চান না। যাবতীয় ‘মান-অভিমান’ দূরে সরিয়ে রেখে আবারও কংগ্রেসের মধ্যে সক্রিয়ভাবে ফিরে আসা পাইলট কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। থারুরের সঙ্গেও যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন এবং মেসেজের উত্তর দেননি।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সাংসদ জানিয়েছেন, ‘জরুরি ভিত্তিতে’ কংগ্রেসের অভ্যন্তরে সংস্কারের প্রয়োজন আছে বলে চিঠিতে সই করেছিলেন। তাঁর কথায়, ‘এটা বিষয় সংক্রান্ত, ব্যক্তিত্ব নয়। বার্তাবাহকে নিশানা না করে গান্ধী ও অন্য বর্ষীয়ান নেতাদের (চিঠির) বার্তা পড়া উচিত ছিল। আমরা চিঠিতে নাম উল্লেখ করেছিলাম কারণ আমাদের বিশ্বাস যে আমাদের সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা আছে। এখানে কোনও রহস্য লুকিয়ে নেই।’
তাতে অবশ্য কোনও লাভ হয়নি। বরং ওয়ার্কিং কমিটির সাত ঘণ্টার উত্তাল বৈঠক শেষে ঠিক হয়, আপাতত অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি থাকবেন সোনিয়া। এআইসিসির পরবর্তী বৈঠক না হওয়া পর্যন্ত একটি কমিটি তাঁকে সাহায্য করবে বলে কথা চলছে। যদিও কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির প্রস্তাবনায় সেরকম কোনও কমিটির উল্লেখ করা হয়নি।