দলের নয়া সভাপতি নির্বাচনের জন্য আগামী বছর জানুয়ারিতে এআইআইসির সভা ডাকতে পারে কংগ্রেস। বিষয়টির সঙ্গে যুক্ত দুই বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা ‘হিন্দুস্তান টাইমস’-কে সেকথা জানিয়েছেন।
গত সোমবার কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে দলের একটি অংশের নেতারা আগামী এক বছরের মধ্যে সেই সভা ডাকার পক্ষপাতী ছিলেন। কিন্তু প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধী-সহ দলের অনেক নেতাই অতদিন দেরি করতে রাজি ছিলেন না। ছ'মাসের মধ্যে সভা করার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন তাঁরা।
রাজনৈতিক মহলের মত, জানুয়ারিই কংগ্রেসের জন্য উপযুক্ত সময়। কারণ চলতি বছরের শেষের দিকে বিহার বিধানসভা ভোটের পর সেই সময় আর কোনও নির্বাচন থাকবে না। ফলে নয়া বছরের শুরুতে নয়া সভাপতি বেছে নিয়ে সে বছরের পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে (পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, কেরালা, অসম এবং পুদুচেরি) ঝাঁপাতে পারবে শতাব্দীপ্রাচীন দল।
সম্প্রতি ২৩ জন কংগ্রেস নেতার চিঠির পর দলের নেতৃত্ব বদল নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে। সেই বৈঠকের শুরুতেই সোনিয়া গান্ধী জানিয়েছিলেন, কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতির পদ থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হোক। কিন্তু নয়া সভাপতি নির্বাচিত না হওয়া প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-সহ একাধিক বর্ষীয়ান নেতা সোনিয়াকে কাজ চালিয়ে যাওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন। শেষপর্যন্ত সেটাই নয়। সাত ঘণ্টার উত্তপ্ত বৈঠক শেষে জানানো হয়েছিল, আপাতত দলের দায়িত্বে থাকছেন সোনিয়া। ছ'মাসের মধ্যে এআইসিসির সভা ডেকে নয়া সভাপতি নির্বাচন করা হবে।
কংগ্রেস নেতারা জানিয়েছেন, রাহুল আর কংগ্রেসের সভাপতি পদে ফিরতে চান না। যিনি ২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত দলের হটসিটে ছিলেন। তাঁর নেতৃত্বেই লোকসভা নির্বাচনে লড়েছিল। কিন্তু সেখানে ভরাডুবির জন্য সভাপতির পদ থেকে সরে গিয়েছিলেন রাহুল। যদিও কংগ্রেস নেতাকর্মীদের একাংশ রাহুলকেই দলের সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে দেখতে চান এবং গান্ধী পরিবারের বাইরে কাউকে তাঁরা নাও মেনে নিতে পারেন। তা নিয়ে সোমবার নয়াদিল্লিতে কংগ্রেসের সদর দফতরের বাইরে রীতিমতো প্ল্যাকার্ড, পোস্টার নিয়ে হাজির ছিলেন দলের একটি অংশের নেতা-কর্মীরা।
এমনিতে এআইসিসি সভা হল ম্যারাথন প্রক্রিয়া। তা প্রথমে সদস্যপদ কর্মসূচি দিয়ে শুরু হয়। তারপর রাজ্যস্তরের প্রতিনিধিদের নির্বাচন হয়। সাম্প্রতিক ইতিহাসে প্রতিবারই সর্বসম্মতভাবে কংগ্রেসের সভাপতি বেছে নেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র ২০০০ সালে সোনিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পথে হেঁটেছিলেন জিতেন্দ্র প্রসাদা। যিনি পুরোপুরি পর্যদুস্ত হয়েছিলেন।