দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ ও পাথর ছোড়াছুড়ির ঘটনার মাঝে পড়ে গুরুতর জখম হলেন বিহারের সাসারাম লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস সাংসদ মনোজ কুমার। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটে কৈমুর জেলার কুদ্রা থানা এলাকার নাথুপুর গ্রামের কাছে।
এই ঘটনার পরই আহত সাংসদকে ভাবুয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। কিন্তু, সেখানকার চিকিৎসকরা তাঁকে তৎক্ষণাৎ পটনার পিএমসিএইচ-এ রেফার করে দেন। তার আগে অবশ্য সদর হাসপাতালে সাংসদকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
সদর হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সাংসদের মাথায় চোট রয়েছে। তবে, তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক নয়। তিনি বিপন্মুক্ত রয়েছেন।
ঘটনা প্রসঙ্গে কৈমুরের পুলিশ সুপার হরি মোহন শুক্লা জানান, এদিন কুদ্রা ব্লকের চিলবিলি পিএসিএস-এর ভোট গণনা হয়। তাতে চেয়ারম্যান পদে জয়ী হন সুনীল চৌবে নামে এক ব্যক্তি। এরপর তাঁর ১৫ থেকে ২০ জন সমর্থক, যাঁরা আদতে নাথুপুর গ্রামেরই বাসিন্দা তাঁরা স্থানীয় একটি মন্দিরে পুজো দিতে যান। গ্রামের ঠিক বাইরেই রয়েছে ওই মন্দির। তাঁরা শোভাযাত্রা করে মন্দিরের পথে রওনা হন।
সেই রাস্তাতেই রয়েছে একটি বেসরকারি স্কুল। যার মালিক হলেন ওই সাংসদ। সেই স্কুলের কয়েকটি বাস সেখানে দাঁড় করানো ছিল। দাবি করা হচ্ছে, সেই স্কুল বাসগুলির চালকদের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া কয়েকজন যুবক।
অভিযোগ, তাঁরা প্রথমে চালকদের রাস্তা থেকে বাস সরাতে বলেন এবং তারপর চালকদের মারধর করেন। এই ঘটনা কানে যেতেই সেখানে উপস্থিত হন সাংসদের ভাই এবং ওই স্কুলের ডিরেক্টর মৃত্যুঞ্জয় কুমার। সঙ্গে ছিলেন তাঁর অনুগামীরা। তাঁরা অন্য পক্ষকে পালটা মারধর করেন।
এই ঘটনায় একজন গ্রামবাসী গুরুতর জখম হন। এরপর নাথুপুর থেকে অন্য বাসিন্দারা ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছন এবং তাঁরা তাঁদের ঐতিহ্যগত বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে মারপিট শুরু করে দেন। শুরু হয় একে অন্যকে লক্ষ করে পাথর ছোড়াছুড়ি।
এদিকে, ভাইয়ের কাছ থেকে খবর পেয়ে সাংসদ মনোজ কুমারও সেখানে পৌঁছে যান এবং এই ঝামেলার মধ্য়ে পড়ে আহত হন। তাঁর মাথায় 'উড়ে আসা' একটি থান ইট লাগে। রক্তাক্ত হয়ে পড়েন তিনি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশও। তারা দুই পক্ষকে থামানোর চেষ্টা করে। কিন্তু, সহজে দুই পক্ষের মধ্যে পাথর ছোড়াছুড়ি বন্ধ করা যায়নি।
এদিকে, খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছন পুলিশ সুপার। তিনি আগে সাংসদকে সেখান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়। বেশ কিছুক্ষণের চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। পুলিশ উন্মত্ত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দিতেই পরিস্থিতি ক্রমশ স্বাভাবিক হয়। এরপর স্কুলের পড়ুয়াদেরও নিরাপদে তাদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়।
এই ঘটনায় সাংসদ-সহ দুই পক্ষের মোট চারজন আহত হয়েছেন। দু'টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এবং অভিযুক্তদের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে।