৪৫ বছরের এক মহিলাকে লাগাতার ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার করা হল কংগ্রেসের এক নেতা তথা সাংসদকে। ধৃতের নাম রাকেশ রাঠোর। তিনি উত্তরপ্রদেশের সীতাপুরের সাংসদ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগকারিণীর দাবি, রাকেশ তাঁকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এবং তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ার তৈরি করে দেবেন বলেও কথা দিয়েছিলেন। আর এই দুই ভুয়ো প্রতিশ্রুতি দিয়েই তিনি গত চারবছর ধরে ওই মহিলাকে ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ করা হচ্ছে।
এই ঘটনায় গত প্রায় দু'সপ্তাহ ধরে অভিযুক্ত সাংসদের খোঁজে নানা জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছিল পুলিশ। অবশেষে বৃহস্পতিবার মেলে সাফল্য। গ্রেফতার করা হয় রাকেশকে। এই গ্রেফতারির সত্যতা স্বীকার করেছেন সীতাপুরের পুলিশ সুপার চক্রেশ মিশ্র।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি এই ঘটনায় রাকেশ রাঠোরের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ (ধর্ষণ), ৩৫১-৩ (অপরাধমূলক উদ্দেশ্য) এবং ৩২৭-২ (আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে ভয় দেখানো) নম্বর ধারা প্রয়োগ করা হয়। ওই এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল সীতাপুরের নগর কোতোয়ালি থানায়।
এরপর থেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন কংগ্রেসের ওই সাংসদ। এমনকী, তিনি আগাম জামিন নেওয়ারও চেষ্টা করেন। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত তাঁকে গ্রেফতারই হতে হল।
কারণ, বুধবার এলাহাবাদ হাইকোর্টের লখনউ বেঞ্চ তাঁর আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয়। বদলে আদালত তাঁকে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দেয়। আদালতের সাফ জানিয়ে দিয়েছিল, পরবর্তী দু'সপ্তাহের মধ্যে সীতাপুর জেলা ও দায়রা আদালতে রাকেশ রাঠোরকে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার নিজের বাড়িতে একটি সাংবাদিক সম্মেলনের ডাক দিয়েছিলেন রাকেশ রাঠোর। তাঁর বিরুদ্ধে যে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে, সেই ঘটনায় তাঁর অবস্থান ও বক্তব্য তুলে ধরতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, সেই সময়েই তাঁকে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
এরপর কংগ্রেস সাংসদকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য নগর কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পরবর্তী যাবতীয় আইনি প্রক্রিয়া সারা হবে। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, শীঘ্রই ধৃতকে আদালতে পেশ করা হবে। তারপর আদালত যা নির্দেশ দেবে, সেই অনুসারে পদক্ষেপ করা হবে।
পুলিশ সুপার আরও জানিয়েছেন, গত দু'সপ্তাহ ধরে রাকেশ রাঠোরকে গ্রেফতার করতে সীতাপুর ছাড়াও লখনউ এবং অন্য়ান্য শহরে একাধিক অভিযান চালায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।
এছাড়াও, ২১ জানুয়ারি সাংসদের সীতাপুরের বাড়িতে পুলিশের তরফে নোটিশ পাঠানো হয়। তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের যে অভিযোগ উঠেছে, সেই বিষয়ে তাঁর বক্তব্য জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু, তারপরও পুলিশের মুখোমুখি হননি তিনি। পুলিশ সুপারের দাবি, গত দু'সপ্তাহ ধরে পুলিশের চোখে ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন ওই অভিযুক্ত।
পুলিশ সুপার জানান, 'আমরা দুপুর দেড়টা নাগাদ ওঁর বাড়িতে অভিযান চালাই। তার আগেই আমরা জানতে পেরেছিলাম, তিনি সেখানে সাংবাদিক বৈঠক করছেন। তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, সেই বিষয়ে নিজের বক্তব্য জানাতে এই সাংবাদিক সম্মেলন করেন তিনি।'