'ইভিএম-এর অর্থ হল - এভরি ভোট এগেনইসট মোল্লা' (প্রত্যেকটি ভোট মুসলমানদের বিরুদ্ধে)! সূত্রের দাবি, একটি হিন্দুত্ববাদী অনুষ্ঠানের মঞ্চে ভাষণ দিতে গিয়ে নাকি এমনই মন্তব্য করেছেন মহারাষ্ট্রের মৎস্য এবং বন্দর মন্ত্রী নীতেশ রাণে! শনিবার তাঁর মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করলেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা তথা সাংসদ শশী থারুর।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিকে শশী বলেন, মহারাষ্ট্রের মন্ত্রীর এই মন্তব্য 'শকিং'! এবং এই মন্তব্য ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের একতার আদর্শের তীব্র পরিপন্থী।
শশীর মতে, শুধুমাত্র কোনও একটি জাতি, ধর্ম বা সম্প্রদায়কে নিশানা করা অত্যন্ত ভুল। কারণ, এই দেশের প্রত্যেকটি নাগরিকই সমান। আর একমাত্র এই ভাবনা নিয়ে এগোলেই দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব।
সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে শশী এই প্রসঙ্গে বলেন, 'এই ধরনের আচরণ সত্যিই শকিং। আমাদের সত্যিই স্বাধীনতা আন্দোলনের মূল তত্ত্বগুলি অনুধাবন করতে হবে। যেখানে কিছু মানুষ বলেছে, ধর্মের নিরিখেই তাদের দেশ গঠিত হয়েছে। তারা চলে গিয়েছে এবং পাকিস্তান গঠন করেছে।...'
'অন্যদিকে, মহাত্মা গান্ধী - আমাদের নেতা বলেছিলেন, আমরা সকলের জন্যই স্বাধীনতার লড়াই লড়েছি। আমরা সকলের জন্য দেশ গঠন করব। আমরা সকলের জন্যই সংবিধান রচনা করব। এবং এখানে সকলেই সমান অধিকার নিয়ে বসবাস করবেন।'
এরই সঙ্গে শশী আরও বলেন, 'আমি অবশ্যই এটা বলতে চাই, যেকোনও একটি সম্প্রদায়কে নিশানা করা, তা সে মুসলমান হোক, হিন্দু হোক, খ্রিস্টান হোক অথবা অন্য যে কোনও ধর্ম, এটা একেবারই ভু়ল। আমরা প্রত্যেক নাগরিক এই দেশে সমান। আর এটাই একমাত্র পথ, যে পথে দেশের সামগ্রিক উন্নতি হতে পারে।'
প্রসঙ্গত, শুক্রবার 'হিন্দু গর্জন সভা' নামে একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন মহারাষ্ট্র মন্ত্রিসভার সদস্য নীতেশ রাণে। সেখানেই তাঁর বিরুদ্ধে ইভিএম সংক্রান্ত বিতর্কিত মন্তব্যটি করার অভিযোগ ওঠে।
অন্যদিকে, সিপিএম নেত্রী বৃন্দা কারাটও মহারাষ্ট্রের মৎস্য মন্ত্রীর এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন। তাঁর মতে, এমন মন্তব্য করার জন্য নীতেশ রাণেকে গ্রেফতার করা উচিত।
বৃন্দা বলেন, 'এটা ঘৃণা ভাষণ এবং এর জন্য ওঁকে গ্রেফতার করা উচিত। এই লোকটি ভারতের জন্য একটি বিপদ। এবং এই লোক যে এবারই প্রথম এমন সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করলেন, তা নয়। আসল বিষয় হল - একজন মন্ত্রী হয়েও তিনি বিজেপি ও আরএসএস-এর ভণ্ডামীর প্রতিফলন ঘটাচ্ছেন।...'
'প্রধানমন্ত্রী সংবিধানের কথা বলছেন। আর এখানে তাঁর মন্ত্রীরা ঘৃণা ভাষণ ছড়িয়ে সংবিধানের মূল ভিত্তিই ধ্বংস করে দিচ্ছেন। ওঁকে ওঁর পদ থেকেই সরিয়ে দেওয়া উচিত।'