ভারতের নয়া মুখ্য নির্বাচন কমিশনার হিসেবে জ্ঞানেশ কুমারের নাম ঘোষণা করা হয়েছে কেন্দ্রের তরফ থেকে। আর এরপরই সমালোচনায় সরব হয়েছে কংগ্রেস। জ্ঞানেশ কুমারকে নিয়োগ নিয়ে কেন্দ্রের বিজ্ঞপ্তিকে 'তাড়াহুড়ো করে নেওয়া সিদ্ধান্ত' বলে আখ্যা দিয়েছে কংগ্রেস। দলের অভিযোগ, যে কমিটি ওই অফিসারের নাম সুপারিশ করেছিল, সেই প্যানেলের কাঠামো নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিকে এড়িয়ে যেতে চাইছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার। (আরও পড়ুন: রাজধানী না বনগাঁ লোকাল, ধরতে পারবেন না, হাওড়া থেকে ছাড়া ট্রেনে 'পটনা আতঙ্ক')
আরও পড়ুন: দেশে ফেরার বার্তা হাসিনার, ডেভিল হান্ট অভিযান নিয়ে ইউনুস সরকারকে তোপ
এই নিয়ে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল সোমবার রাতে এক্স-এ লিখেছেন, 'এটি আমাদের সংবিধানের চেতনার পরিপন্থী, এবং সুপ্রিম কোর্ট অনেক ক্ষেত্রেই বারবার বলেছে - নির্বাচনী প্রক্রিয়ার পবিত্রতার জন্য মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে নিরপেক্ষ হতে হবে। নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ সংক্রান্ত সংশোধিত আইনে প্রধান বিচারপতিকে সিইসি প্যানেল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই আবহে মুখ্য নির্বাচনী অফিসার বাছাইয়ের আগে সরকারের উচিত ছিল বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) এই বিষয়ে শীর্ষ আদালতের শুনানি পর্যন্ত অপেক্ষা করা। তড়িঘড়ি করে আজকে বৈঠক করে নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়োগের সিদ্ধান্ত প্রমাণ করে যে তারা সুপ্রিম কোর্টের তদন্ত এড়িয়ে সুস্পষ্ট আদেশ কার্যকর হওয়ার আগেই নিয়োগ সম্পন্ন করতে আগ্রহী। 'এ ধরনের ভয়ঙ্কর আচরণ' প্রমাণ করে ক্ষমতাসীন সরকার নির্বাচনী প্রক্রিয়া ধ্বংস করছে এবং নিজেদের স্বার্থে নিয়ম লঙ্ঘন করছে। ভুয়ো ভোটার তালিকা হোক, বিজেপির অনুকূলে সূচি হোক বা ইভিএম হ্যাকিং নিয়ে উদ্বেগ – এই ধরনের ঘটনার জন্য সরকার এবং তাদের নিযুক্ত সিইসির ওপর সন্দেহ বজায় আছে। লোকসভার বিরোধী দলনেতা হিসেবে রাহুল গান্ধী যথার্থই বলেছেন যে শীর্ষ আদালত এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা উচিত ছিল।' (আরও পড়ুন: ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে মুজিবের বাড়ি ভাঙার দায় জনতার ওপর চাপালেন বাংলাদেশি উপদেষ্টা)
আরও পড়ুন: পরীক্ষা আধা যেতে না যেতেই প্রশ্নফাঁস নিয়ে ছড়িয়ে পড়ল নানা দাবি, মুখ খুলল বোর্ড
এদিকে বিতর্কের আবহেই ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার হিসেবে কার্যকালের মেয়াদ শুরু হবে জ্ঞানেশ কুমারের। ২০২৯ সালের ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত সেই পদে থাকবেন তিনি। অর্থাৎ আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন করানোর দায়িত্ব থাকবে তাঁর কাঁধেই। অবশ্য, তাঁর প্রথম পরীক্ষা হবে বিহার বিধানসভা নির্বাচনে। ১৯৮৮ ব্যাচের কেরল ক্যাডারের আইএএস অফিসার এই জ্ঞানেশ। এর আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে কাজ করেছেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের যুগ্মসচিবের (কাশ্মীর ডিভিশন) দায়িত্ব সামলেছিলেন তিনি। ২০১৯ সালের ৫ অগস্ট জম্মু ও কাশ্মীর থেকে সংবিধানের ৩৭০ ধারা রদের যে ঘোষণা করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, সেটার খসড়া তৈরির ক্ষেত্রে জ্ঞানেশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। (আরও পড়ুন: গুলিবিদ্ধ হয় বাংলাদেশি,ধৃত ১০ অনুপ্রবেশকারী! জলপাইগুড়ির সীমান্তে পদক্ষেপ BSF-এর)
আরও পড়ুন: বাংলেদেশে ভারতীয়দের মারধরের অভিযোগ করেছিলেন মমতা, ওপারের উপদেষ্টা বললেন...
এর আগে এর্নাকুলামের অ্যাসিসট্যান্ট কালেক্টর, আদুরের সাব-কালেক্টর, তফসিলি জাতি ও তফসিলি উপজাতিদের জন্য কেরল রাজ্য উন্নয়ন পর্ষদের ম্যানেজিং ডিরেক্টর, কোচিন পুরনিগমের পুর কমিশনারের মতো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদ সামলেছিলেন। এছাড়া প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের যুগ্মসচিব ছিলেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের যুগ্মসচিব এবং অতিরিক্ত সচিব হিসেবেও কাজ করেছেন। সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রকের সচিবও ছিলেন। তিনি এবার ভারতের ২৬তম মুখ্য নির্বাচন কমিশনার হচ্ছেন।