ভারতে যে 'এক দেশ, এক নির্বাচন' প্রক্রিয়া চালু করতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, তা কার্যকর করা 'অসম্ভব'! বৃহস্পতিবার একথা বলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে।
তাঁর বক্তব্য, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় এই বদল আনতে হলে সংসদের সকল পক্ষের সহমত হওয়া দরকার। তাই, প্রধানমন্ত্রীর এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
এই প্রসঙ্গে খাড়্গে এদিন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যেটা বলেছেন,তা তিনি করবেন না। কারণ, যখন ওই প্রস্তাব সংসদে আসবে, তখন তাঁকে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের অনুমোদন নিতে হবে। একমাত্র তবেই এই পরিকল্পনা কার্যকর করা সম্ভব হবে। এটা অসম্ভব। এক দেশ, এক নির্বাচন করানো অসম্ভব।’
প্রসঙ্গত, এদিনই 'এক দেশ, এক নির্বাচন' নীতি কার্যকর করার স্বপক্ষে আওয়াজ তুলেছিলেন মোদী। তারই প্রেক্ষিতে উপরোক্ত মন্তব্যটি করেন প্রবীণ কংগ্রেস সাংসদ।
এদিন গুজরাতে আয়োজিত জাতীয় সংহতি দিবসের অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে মোদী বলেন, 'আমরা এক দেশ, এক নির্বাচন - নীতি কার্যকর করার জন্য কাজ শুরু করেছি। ওই ব্যবস্থা ভারতের গণতন্ত্র আরও পোক্ত করবে। এর ফলে ভারতীয় সম্পদের সর্বাধিক সুফল পাওয়া যাবে। এবং উন্নত ভারত নির্মাণের স্বপ্ন এক নয়া গতি অর্জন করবে।'
এই প্রসঙ্গে মোদী 'এক দেশ, এক দেওয়ানি বিধি' কার্যকর করার কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, 'আজ, ভারত এক দেশ, এক দেওয়ানি বিধি অর্জনের পথে এগিয়ে চলেছে। যা হবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেওয়ানি বিধি।'
তবে, মোদী যতই 'এক দেশ, এক নির্বাচন' নীতির প্রশংসা করুন না কেন, বিরোধীরা কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের এই পরিকল্পনার চরম সমালোচনা করছে।
অনেকেই এই পরিকল্পনাকে 'অবাস্তব' বলে কটাক্ষ করছেন। আবার কারও কারও অভিযোগ, 'এক দেশ, এক নির্বাচন' প্রক্রিয়া চালু করার নামে মোদী সরকার আদতে ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় এবং গণতান্ত্রিক কাঠামো ভেঙে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ সেপ্টেম্বরই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা 'এক দেশ, এক নির্বাচন'-এর প্রস্তাব পাস করেছে। যার আওতায় আগামী দিনে একইসঙ্গে লোকসভা এবং রাজ্যগুলির বিধানসভার নির্বাচন করানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।
আর, সেই নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ১০০ দিনের মধ্য়ে পুরসভা, পুরনিগম ও গ্রাম পঞ্চায়েত মতো স্থানীয় প্রশাসনিক নির্বাচনগুলিও একত্রে সেরে ফেলার কথা বলা হয়েছে।
সমস্যা হল, বাস্তবে বিভিন্ন বিধানসভাগুলির নির্বাচনের সময় লোকসভার সঙ্গে মেলে না। এমনকী, এক বিধানসভার নির্বাচনের সময়সীমা অন্য রাজ্যের বিধানসভার থেকে আলাদা। আর, স্থানীয় প্রশাসনগুলির নির্বাচনী প্রক্রিয়া তো আরও জটিল।
এই প্রেক্ষাপটে কীভাবে সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রে এবং পরবর্তীতে সারা দেশের সমস্ত আঞ্চলিক প্রশাসনের নির্বাচন করানো হবে, তা নিয়ে নানা মহলেই প্রশ্ন উঠছে। যদিও কেন্দ্রীয় সরকার সেসবে পাত্তা দিতে নারাজ।