তেলাঙ্গানার দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণ করলেন রেবন্ত রেড্ডি। হায়দরাবাদের এলবি স্টেডিয়ামে নির্ধারিত সময়ের কিছুটা পরেই শপথগ্রহণ করেন কংগ্রেস নেতা। প্রথমে বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা ২৮ মিনিটে শপথ নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নিরাপত্তাজনিত কারণে সেই বিশেষ 'মুহূর্ত'-র সময় পালটে ফেলা হয়। তারপর ঠিক করা হয়েছিল যে দুপুর ১ টা ৪ মিনিটে শপথগ্রহণ করবেন। কিন্তু সেই নির্ধারিত সময়ের পরে মঞ্চে এসে পৌঁছান রেবন্ত। শেষপর্যন্ত দুপুর ১ টা ২২ মিনিটে শপথগ্রহণ করেন। রীতি মেনে শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন তেলাঙ্গানার রাজ্যপাল তামিলিসাই সৌন্দরারাজন। আর তিনি তেলুগু ভাষায় ‘আমি রেবন্ত রেড্ডি’ বলার পরই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে লালবাহাদুর স্টেডিয়াম। শব্দব্রহ্মে পুরো স্টেডিয়াম কেঁপে ওঠে। রেবন্তের পরে উপ-মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন ভাট্টি বিক্রমার্কা। তারপর একে-একে তেলাঙ্গানার নয়া মন্ত্রীরা শপথ নিতে থাকেন।
আর মঞ্চে বসে সেই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান দেখেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, কংগ্রেসের সংসদীয় কমিটির চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধী, কংগ্রেস সাংসদ রাহুল। বাকি চারটি রাজ্যে ভরাডুবির পর আজ লালবাহাদুর স্টেডিয়ামের দৃশ্যে তাঁদের মুখে হাসি ফুটবে। আর হাসি ফুটবে স্টেডিয়ামের শব্দব্রহ্ম শুনে। রেবন্ত তো বটেই, বাকিরাও যখন শপথগ্রহণ করতে ওঠেন, তখন ‘আমি’ বললেই তুমুল চিৎকার করে উঠছে স্টেডিয়াম।
রেবন্ত রেড্ডির ইতিবৃত্ত
১) এবার কংগ্রেস যে ব্যক্তির নেতৃত্বে তেলাঙ্গানা বিধানসভা নির্বাচনে জিতেছেন, তিনি হলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি রেবন্ত। যিনি তেলাঙ্গানার দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী হলেন। ২০১৪ সালে পৃথক তেলাঙ্গানা গঠনের পর থেকে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিটা ছিল কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের। আজ সেটা আনুষ্ঠানিকভাবে ছিনিয়ে নিলেন রেবন্ত।
২) তবে কংগ্রেস ঘরানার রাজনীতি দিয়ে রেবন্তের উত্থান হয়নি। ডানপন্থী অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি) সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন রেবন্ত। পরবর্তীতে তেলুগু দেশম পার্টিতে (টিডিপি) যোগ দিয়েছিলেন। সেইসময় অন্ধ্রপ্রদেশ অবিভক্ত ছিল। তারপর ২০১৮ সালে যোগ দেন কংগ্রেসে। ২০২১ সালে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হন।
৩) ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেছেন রেবন্ত। তাঁর পরিবারের চারকূলেও কেউ রাজনীতি করতেন না। রেবন্তও একটা সময় পারিবারিক কৃষি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আবাসনের ব্যবসা করেছিলেন।
৪) ১৯৯২ সালে বিয়ে করেন রেবন্ত। কংগ্রেস নেতা জয়পাল রেড্ডির ভাগ্নির সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়।
৫) তেলাঙ্গানা বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি যে হলফনামা দাখিল করেছিলেন রেবন্ত, তাতে তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ হল ৩০ কোটি টাকা (স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি মিলিয়ে)। যিনি এবার দুটি আসন থেকে লড়েছিলেন। একটি আসনে জিতেছেন। একটি আসনে হেরে গিয়েছেন।