চার রাজ্য এবং একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিধানসভা নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে। আর তাই ১৫ গুরদ্বারা রাকাবগঞ্জ রোডের কংগ্রেস দফতরে ভোটের তৎপরতা তুঙ্গে উঠেছে। সেখানে দুটি কনফারেন্স রুম ছাড়াও কয়েকটি কেবিন, ক্যান্টিন ও কংগ্রেসের সোশ্যাল মিডিয়া সেল কংগ্রেস নেতাদের যুদ্ধক্ষেত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা ওই রুমগুলি বুকিং করতে উঠে পড়ে লেগেছে। কেউ যদি কোনও স্লটের জন্য ঘরগুলি বুকিং করতে গেলেন, তখন জানতে পারলেন, সেগুলি আগে থেকেই বুক করা রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এমনটাই জানিয়েছেন, কংগ্রেসের এক প্রবীণ নেতা।
এআইসিসি’র অরুণাচল প্রদেশ মেঘালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মনীশ ছত্রাত এভাবেই তার দলের জন্য দিল্লির সদর দফতরে কোনক্রমে জায়গা পেয়েছেন। কংগ্রেসের এই যুদ্ধকালীন ঘরগুলির চাহিদা এখন তুঙ্গে উঠেছে। দেশের রাজধানীতে একটু জায়গা পাওয়ার জন্য কালঘাম ছুটছে কংগ্রেস নেতাদের। গত দু’বছর আগে দলের কার্যকলাপ দিল্লির পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছিল। তথ্য বলছে, কংগ্রেসের গবেষণা, তথ্য বিশ্লেষণ, সোশ্যাল মিডিয়া এবং যোগাযোগের জন্য গুরুদুয়ারা রাকাবগঞ্জ রোডের এই দফতরে জায়গা পেয়েছে। নির্বাচনের কাজে এই দফতর কাজে লাগত। কিন্তু আজ
এই সম্পত্তি দলের কর্মচারীদের আর কোনও কাজে লাগে না। নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত দুই নেতা এমনটাই জানালেন। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে লোধী এস্টেটের একটি ছোট বাংলোতে ঘর তৈরি করা হয়েছিল। সেখানে দলের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করা হত। শুধু তাই নয়, সেখানে তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রচারও করা হত। রোজ সন্ধ্যেবেলায় দলের শীর্ষ নেতারা সেখানে বৈঠক করতেন। কিন্তু এখন সেই বাংলো ব্যবহার করা হয় না বলে জানালেন আর এক প্রবীণ কংগ্রেস নেতা।
দিল্লির গুরুদুয়ারা রোডের কংগ্রেসের ওই দফতর রাজ্যসভার সদস্যদের বৈঠকের জন্য বরাদ্দ করা হয়। এমনকী দলের নির্বাচনী কার্যকলাপের জন্য উপযুক্ত করে গড়ে তোলা হয়। সেখানে নির্বাচনের রণনীতি সংক্রান্ত বৈঠক করেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। যদিও কংগ্রেসের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী এই দফতরে কখনও আসেননি। তবে সোনিয়া তনয় রাহুল গান্ধী অহরহ দলের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক এই দফতর থেকে সেরে নেন।
দলের সাধারণ সম্পাদকদের ছাড়া অন্য কোনও নেতারা আগেভাগে অ্যাপোয়েন্টমেন্ট করলে, তবেই এই দফতরে প্রবেশের অনুমতি মেলে। নিরাপত্তা এতটাই কড়াকড়ি যে যদি আপনার নাম মূল গেটের নিরাপত্তারক্ষীদের কাছে না থাকে তাহলে আপনাকে সেখানে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন পূর্ব রাজ্যের কাজের দায়িত্বে থাকা এক কংগ্রেস নেতা। নিরাপত্তা ঘেরাটোপ এতটাই বেশি যে শীর্ষস্থানীয় নেতা বাদে কারও গাড়ি সেখানকার পার্কিং লটে ঢুকতে দেওয়ার অনুমতি নেই।
উল্লেখ্য, কয়েক বছর আগে রোজ যাতায়াতকারীদের বায়োমেট্রিক প্রবেশ ও বাইরে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এমনকী সোশ্যাল মিডিয়ার কর্মীরা এই দফতরের অন্য গেট ব্যবহার করে থাকেন। তবে সেটা আলাদা দেওয়াল দিয়ে ঘেরা। যদিও ওই দফতরের কাজের পরিবেশ একই। কিন্তু করোনার কারণে মৃত কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা আহমেদ প্যাটেল এখানে দৈনিক যাতায়াত করতেন। তার জন্য একটি পৃথক ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল। তবে এবার বহু বছর পর কংগ্রেস নেতা আহমেদ প্যাটেলকে ছাড়াই এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।