ইন্ডিয়া জোটে তিন-তিনটে বৈঠকের পরও অধীর চৌধুরী তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর নরম করেননি। ধূপগুড়ির জনসভা থেকে যেভাবে রাজ্য সরকাররে নিশানা করেছেন প্রদেশ সভাপতি তাতে একটা বিষয় পরিষ্কার, অধীর সভাপতি থাকলে কংগ্রেস সঙ্গে তৃণমূলের আসন সমোঝতার পথ মোটেই সুগম হবে না। তবে কী তাঁকে সরিয়ে দিয়ে তুলনার নরম কাউকে প্রদেশ সভাপতি পদে বসানো হবে? আবার তৃণমূল কতগুলি আসন ছাড়লে তৃণমূল সমঝোতায় রাজি হবে? এই সব প্রশ্নের উত্তরের জন্য দিল্লি তাকিয়ে আছে রাজ্য নেতাদের দিকেই।
মুম্বইয়ে ইন্ডিয়া-র বৈঠকের আগের দিন সাত সকালে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পৌঁছে যান সনিয়া গন্ধীর বাড়ি। সেখানে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বেশ খানিকক্ষণ আলোচনা করেন। কী আলোচনা করেছে তা জানা যায়নি। কারণ তাঁদের এই বৈঠকে বিষয়ে আগে থেকে কোনও খবর ছিল না। তবে কংগ্রেসের একটি সূত্র বলছে, আসন্ন লোকসভা ভোটে আসন সমঝোতা নিয়ে প্রাথমিক কথা হয়েছে দুই নেতার মধ্যে। তবে আলোচনা যাই হোক না কেন, রাজ্য নেতাদের মনমর্জি বুঝেই সমঝোতা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কংগ্রেস হাইকমান্ড।
এক্ষেত্রে প্রদেশ সভাপতি বদল হলে নতুন কাকে সভাপতি করা হবে তা নিয়েও রাজ্য নেতাদের মতকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। দুম করে উপর থেকে কাউকে চাপিয়ে দিতে নারাজ রাহুল গান্ধী ও কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গেও।
(পড়তে পারেন। দ্রুত ইস্তেহার তৈরি করা প্রয়োজন, মমতার প্রস্তাবে কেমন ভাবনা জোটের প্রতিনিধিদের?)
প্রশ্ন হল, যদি কংগ্রেস-তৃণমূল আসন সমঝোতা হয় তবে বামেদের সঙ্গে সম্পর্কের কী হবে। তা নিয়ে এই মুহূর্ত মুখ খুলতে নারাজ কেউই। কারণ, বাধ্যবাধ্যকতার কারণে তৃণমূলের সঙ্গে রাজ্যে কোনও জোট করবে না সিপিএম। তবে কংগ্রেসের কেউ কেউ মনে করেছেন তৃণমূলের সঙ্গে আসন সমঝোতা করলে রাজ্যে কংগ্রেসের লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে সবটাই নির্ভর করছে রাজ্য নেতারা কী চাইছেন তার উপরে।
পশ্চিমবঙ্গে শাসকদলের সঙ্গে কংগ্রেসের যা সম্পর্ক দিল্লি ও পঞ্জাবে আপের সঙ্গে সেই একই সম্পর্ক। সেক্ষেত্রে দিল্লি-পঞ্জাবেও রাজ্য নেতাদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে হাইকমান্ড। দিল্লির প্রদেশ সভাপতি অনিল চৌধুরিকে সম্প্রতি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি কট্টর আপ-বিরোধী বলে পরিচিত ছিলেন। তাঁর বদলে বসানো হয়েছে অরবিন্দর সিং লাভলিকে। তিনি তুলনায় আপ সম্পর্কে নরমপন্থী। রাজ্যে কী সেরকমই কাউকে প্রদেশ সভাপতি করা হতে পারে। সবটাই নির্ভর করছে পশ্চিমবঙ্গের নেতারা কী বলছেন তার উপর।