এক মহিলাকে 'হ্যাক হওয়া স্মার্টফোন' বিক্রি করার খেসারত দিতে হল আমাজন রিটেল ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষকে। জেলা উপভোক্তা আদালতের স্পষ্ট নির্দেশ, অবিলম্বে ওই মহিলার খোয়া যাওয়া ৪০ হাজার ৩২৫ টাকা ফেরত দিতে হবে।
সেইসঙ্গে, ক্ষতিপূরণ হিসাবে দিতে হবে আরও ১৮ হাজার টাকা। যার মধ্যে ১০ হাজার টাকা দিতে হবে ভুক্তভোগীর মানসিক উদ্বেগের ক্ষতিপূরণ হিসাবে এবং বাকি ৮ হাজার টাকা দিতে হবে মামলা চালানোর খরচ হিসাবে।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্ট অনুসারে, আদালতের পর্যবেক্ষণ হল, যেহেতু মহিলাকে একটি হ্যাক হয়ে যাওয়া স্মার্টফোন বিক্রি করা হয়েছিল, তার জেরে তাঁর ব্যক্তিগত ও গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে গিয়েছে। এবং সেই তথ্য ব্যবহার করে বেআইনিভাবে কেনাকাটাও করা হয়েছে।
ঠিক কী ঘটেছিল ওই মহিলার সঙ্গে?
চণ্ডীগড়ের ১২ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা সুমিতা দাস। তিনি আমাজন থেকে একটি স্মার্ট ফোন কেনেন। কিন্তু, তারপরই তাঁর সঙ্গে আর্থিক প্রতারণা হয়। যার জেরে পরবর্তীতে তিনি জানতে পারেন, তাঁর ফোনটি আগে থেকেই হ্যাক করা হয়েছিল!
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে হ্যাকাররা ওই মহিলার ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেয় এবং তাঁরই আমাজন অ্য়াকাউন্ট থেকে বেআইনিভাবে কেনাকাটা করে। শুধু তাই নয়, হ্যাকাররা তাঁর আইসিআইসিআই ক্রেডিট কার্ডও হ্যাক করে নেয়। সেইসঙ্গে তাঁর ইমেলের যাবতীয় তথ্য ফাঁস হয়ে যায়।
সুমিতার অভিযোগ, এই বিষয়ে আমাজন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলেও তারা কোনওভাবেই বেআইনি আর্থিক লেনদেন বন্ধ করতে পারেনি এবং যথাযথ পদক্ষেপও করেনি।
মহিলার আরও দাবি, আমাজনকে পুরো ঘটনা জানানোর পর তারা প্রাথমিকভাবে তাঁকে বলেছিল, তাঁর খোয়া যাওয়া টাকা সংস্থার তরফে ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু, বাস্তবে তেমনটা করা হয়নি।
বদলে সংস্থার তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানানো হয়, তারা সমস্ত বিষয়টি খতিয়ে দেখেছে এবং সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বেআইনি কেনাবেচা ও আর্থিক লেনদেন বন্ধ করে দিয়েছে।
তবে, আমাজন কর্তৃপক্ষের এই পদক্ষেপে ভুক্তভোগী মহিলার কোনও লাভ হয়নি। কারণ, তিনি তারপরও তাঁর খোয়া যাওয়া টাকা ফেরত পাননি।
এরপর একপ্রকার বাধ্য হয়েই উপভোক্তা আদালতের দ্বারস্থ হন ওই মহিলা। তাঁর অভিযোগ আদালতে সত্যি প্রমাণিত হওয়ায় আমাজনকে মহিলার খোয়া যাওয়া টাকা ফেরত দেওয়ার পাশাপাশি ১৮ হাজার টাকার জরিমানা দেওয়ারও নির্দেশ দেয় আদালত।