রাম মন্দির ইস্যু নিয়ে কংগ্রেসকে একের পর এক আক্রমণ করে চলেছে বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী খোদ বলেছিলেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় আসলে রাম মন্দিরে তালা লাগিয়ে দিতে চায়। আর এবার রাম মন্দির নিয়ে মহারাষ্ট্র কংগ্রেসের প্রধান নানা পাটোলের একটি মন্তব্য সামনে এসেছে। তিনি বলেছেন, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় এলে রাম মন্দিরের শুদ্ধিকরণ হবে। তাঁর এই মন্তব্যকে ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এর পাল্টা জবাবে নরেন্দ্র মোদী করেন কটাক্ষ।
আরও পড়ুন: ‘প্রধানমন্ত্রী মিথ্যার মহামারী ছড়াচ্ছেন’, রামমন্দির নিয়ে মোদীকে ঠুকলেন জয়রাম
কংগ্রেস নেতা জানান, দেশের চার শঙ্করাচার্যকে দিয়ে রাম মন্দিরের শুদ্ধিকরণ হবে। তিনি অভিযোগ করেছেন, প্রধানমন্ত্রী মোদী ধর্মীয় রীতিনীতি না মেনেই রাম মন্দিরের উদ্বোধন করেছেন। ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় এলে সেগুলির সংশোধন করা হবে এবং শুদ্ধিকরণ করা হবে। নানা পাটোলে আরও বলেন, ‘শুধু যে আমি এই কথা বলছি তাই নয়, চার শঙ্করাচার্যও বলেছেন যে রাম লালার প্রাণ প্রতিষ্ঠায় সঠিক আচার-অনুষ্ঠান অনুসরণ করা হয়নি। শঙ্করাচার্যরা যেভাবে বলেছেন আমরা সেভাবেই রাম মন্দিরের শুদ্ধিকরণ করব।’
তিনি নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করে আরও বলেন, ‘আমাদের সনাতন ধর্ম অনুযায়ী, যদি পরিবারের কেই মারা যান তাহলে আমরা মাথা ন্যাড়া করি। কিন্তু, নরেন্দ্র মোদী তা করেননি।’
এর জবাবে মোদী বলেন,' সদ্য আমাদের রাষ্ট্রপতি অযোধ্যা রামলালার দর্শন ও পুজো করতে গিয়েছিলেন। যখন উনি পুজো অর্চনা করে এলেন, তো তখন কংগ্রেস আঠেরোশো শতকের মানসিকতা নিয়ে বলছে এখন আমরা রামমন্দিরের শুদ্ধিকরণ করব। এই কথা মুম্বইতে প্রেস কনফারেন্স করে বলে কংগ্রেস। ওঁরা বলছে রামন্দির গঙ্গাজল দিয়ে ধোবেন।'
এরপর মোদী প্রশ্ন তোলেন,' একদন আদিবাসী রামলালা দর্শন করেছেন, বলে কি রামমন্দির ধুয়ে ফেলতে হবে? এটা আপনাদের কী মানসিকতা, এটা রাষ্ট্রপতির অপমান, মহিলাদের অপমান, দেশের অপমান, প্রভু শ্রীরামের অপমান।'
উল্লেখ্য, রাম লালার প্রাণ-প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী মোদী বিশেষ ১১ দিনের আচার পালন করেছিলেন। সেই সময় তিনি মেঝেতে শুয়েছিলেন এবং শুধুমাত্র ফল ও নারকেলের জল খেয়ে ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী মহারাষ্ট্রের কালারাম মন্দির, অন্ধ্র প্রদেশের বীরভদ্র মন্দির, কেরালার গুরুবায়ুর মন্দির, শ্রী রামস্বামী মন্দির এবং তামিলনাড়ুর রঙ্গনাথস্বামী মন্দির পরিদর্শন করার সঙ্গে সঙ্গে আধ্যাত্মিক যাত্রাও করেছিলেন।
গত ২২ জানুয়ারি রাম মন্দিরের অভিষেক অনুষ্ঠান হয়েছিল। তাতে অবশ্য রাজনীতির অভিযোগ তুলে যোগ দেয়নি কংগ্রেস।উল্লেখ্য, উত্তরাখণ্ডের শঙ্করাচার্য রাম মন্দিরকে অসম্পূর্ণ বলে মন্তব্য করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, অসম্পূর্ণ মন্দিরে প্রতিমার প্রাণ-প্রতিষ্ঠা করা উচিত নয়। তবে পরে তিনি স্পষ্ট করেছেন যে তিনি কারও সমালোচনা করছেন না।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার বারাকপুরে বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিংয়ের হয়ে প্রচারে আসেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। সেখানে তিনি বলেছিলেন, অযোধ্যার রাম জন্মভূমির পাশে যাতে নতুন করে কোনও বাবরি মসজিদ গড়ে না ওঠে সে বিষয়টিও নজরে রাখতে হবে। তাই বিজেপিকে প্রয়োজন।