ঋতূ মারিয়া জনি
কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, ওড়িশার ট্রেন দুর্ঘটনার মূল কারণটা চিহ্নিত করা গিয়েছে। তবে কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল( ক্যাগ রিপোর্ট) CAG Report ২০২২ এর একটা রিপোর্টে অবশ্য রেলের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করা হয়েছিল। Derailment in Indian Railways-এর রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছিল অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে রেলের ফান্ডকে ব্যবহার করা হচ্ছে না। সেই সঙ্গেই রেললাইন পুুনর্নবীকরণের ক্ষেত্রে অর্থ কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
সেই রিপোর্টে রেলওয়ে সেফটি ফান্ড বা রাষ্ট্রীয় রেল সংরক্ষণ কোষের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। এটা হল একটি রিজার্ভ ফান্ড। কিন্তু ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছিল ২০১৭-১৮ থেকে পাঁচ বছরে সেই ফান্ডে এসেছে ১ লাখ কোটি টাকা। সেই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছিল ২৮৯টি ক্ষেত্রে রেল বেলাইন হওয়ার ঘটনায় এই ফান্ডের যথার্থ ব্যবহার না করাটাই মূলত দায়ী। ২০১৭-২১ সাল পর্যন্ত সব মিলিয়ে ১১২৭টি বেলাইনের ঘটনা হয়েছে ভারতীয় রেলের ইতিহাসে। তার মধ্যে ২৮৯টি ক্ষেত্রে রেলাইন পুননর্বীকরণ না করাটা একটা বড় কারণ।
ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছিল কম অগ্রাধিকার রয়েছে এমন সব ক্ষেত্রে টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। ২০১৭-১৮ সালে এই অঙ্কটা ছিল ৪৬৩ কোটি টাকা। সেটা ২০১৯-২০ সালে বেড়ে হল ১০০৪ কোটি টাকা। এটা আরআরএসকের নীতির বিরোধী বলে মনে করা হয়।
রেললাইন সম্পর্কিত ব্য়াপারে ঠিক কী বলা হয়েছিল ক্যাগ রিপোর্টে?
রিপোর্ট অনুসারে ভারতীয় রেলে ১,১৪,৯০৭ কিমি রেললাইন পাতা রয়েছে। তার মধ্যে ৪৫০০ কিমি প্রতি বছর রিনিউয়াল করা দরকার। আর সবথেকে অবাক করা বিষয় হল গত ৬ বছর ধরে ফান্ডের সমস্যার কারণে এই রেললাইন রিনিউাল করার বিষয়টি ক্রমশই কমছে। এমনকী ২০১৬-১৭ সালের রেলের স্ট্যান্ডিং কমিটির নজরে বিষয়টি এসেছিল।
২০১৯-২০ সালে ওয়েস্টার্ন রেলওয়েতে ৬৮৯.৯০ কোটি ফান্ডের মধ্যে মাত্র ৩.০১ শতাংশ মানে টাকার অঙ্কে মাত্র ২০.৭৪ কোটি টাকা ট্র্যাক রিনিউয়ালের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে।
রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে আর্থিক বরাদ্দের পরিমাণও প্রতি আর্থিক বছরে ক্রমেই কমছে। ২০১৮-১৯ সালে বরাদ্দ ছিল ৯৬০৭.৬৫ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ সালে সেটাই কমে হল ৭,৪১৭ কোটি টাকা। এমনকী স্ট্যান্ডিং কমিটি ট্র্যাক রিনিউয়াল ও সুরক্ষাকে নিশ্চিত করার ব্যাপারে যে প্রস্তাব বা সুপারিশ দিয়েছিল তা করতে ব্যর্থ হয়েছিল রেল প্রশাসন। উল্লেখ করা হয়েছে ক্যাগ রিপোর্টে।