পরপর শায়িত দেহ। করমণ্ডল ট্রেন দুর্ঘটনা কত মানুষের জীবনে বিপর্যয় এনে দিয়েছে। তবে তার মধ্য়ে বরাত জোর বেঁচে গিয়েছেন অনেকেই। সেসব কথাও এখন মুখে মুখে ফিরছে। আসলে রাখে হরি মারে কে…
১৬ বছর বয়সি এক কিশোর। নাম জর্জ জ্য়াকব। বেরহামপুরের বাসিন্দা। সদ্য মাধ্য়মিক পাশ করেছে সে। বাবা মায়ের সঙ্গে সে ওই অভিশপ্ত করমণ্ডল এক্সপ্রেসে ছিল। আসলে ওই ট্রেনে তার আর তার বাবা মায়ের সিট আলাদা পড়েছিল। টিকিট কাটার পরে কনফার্ম হওয়ার পরে বাবা মায়ের কামরায় তার সিট পড়েনি।
ওই কিশোরের সিট পড়েছিল বি-৮ কামরায়। কিন্তু সে সেখানে যেতে চায়নি। তার বাবা মা ছিল কোচ বি ২তে। সেখানেই ছিল সে। আর যখন দুর্ঘটনা হল তখন একেবারে ওলটপালট হয়ে গেল বি-৮ কামরাটি। আর মোটামুটি অক্ষত রইল বি ২ কামরা। কার্যত বরাত জোরে বেঁচে গিয়েছে জর্জ ও তার পরিবার। কিন্তু সে যদি বি-৮ কামরায় ওই সন্ধ্যা বেলা থাকত তবে যে কী হত তা ভাবতেও শিউরে উঠছে জর্জের পরিবার।
আসলে তার বাবা ভেবেছিলেন টিটিকে বলে ছেলের একটা আসন তাদের কাছেই করে নিতে। বা অন্য যাত্রীদের সঙ্গে একটু ওলটপালট করে নিতে। কিন্তু সেসব আর করতে হয়নি। তার আগেই দুর্ঘটনা।
ঠিক কী হয়েছিল ঘটনাটি?
ওই কিশোরের বাবা সংবাদমাধ্য়মে জানিয়েছেন, আমি ভেবেছিলাম টিটিকে বলে বি-৮ কোচে ছেলের যে বার্থটি রয়েছে সেটা একটু বদলাবদলি করব। উঠেও পড়েছিলাম। কিন্তু স্ত্রী বলেছিল রাতের খাবার খাওয়ার পরে যেও। তখন ট্রেনটা কটকে পৌঁছবে তখন যাওয়ার কথা বলেছিল স্ত্রী। সেই মতো তিনি আর যাননি। আর তখনই দুর্ঘটনা। তাতেই কার্যত বেঁচে গেল জর্জ। ছেলেকে জড়িয়ে ধরে এখন ঈশ্বরকে ধন্য়বাদ জানাচ্ছেন বাবা-মা।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার খবর অনুসারে জানা গিয়েছে, পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছে ভগবানকে ধন্য়বাদ, এত বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন তিনি। পরিবারের সদস্য়রা জানিয়েছেন, ছেলের বার্থটা বদল করার ব্য়াপারে আমরা কথাবার্তা বলছিলাম। তখনই আমচকা বিকট শব্দ। অনেকেই ছিটকে পড়ে যান। কান্নকাটি। একেবারে মারাত্মক ব্যাপার।
এরপর ট্রেন থামলে কোনওরকমে বিধ্বস্ত কামরা থেকে বের হয়েছিলেন যাত্রীরা। আর তারপরে মারাত্মক যে ছবি তারা দেখেন তা শিউরে ওঠার মতো। তবে শেষ পর্যন্ত বেঁচে জর্জ।এটাই সৌভাগ্যের।