করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কাজনিত দেশের তালিকায় ১৭ নম্বরে ভারত। এই বিষয়ে বিপজ্জনক হিসেবে চিহ্নিত বিমানবন্দরের মধ্যে রয়েছে কলকাতাও।
চিন থেকে নোভেল করোনাভাইরাস বয়ে আনা সম্ভাব্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে অন্যতম হিসেবে চিহ্নিত হল ভারত। সম্প্রতি বার্লিনের হামবোল্ট বিশ্ববিদ্যালয় এবং রবার্ট কচ ইনস্টিটিউটের গবেষকরা একটি মডেল তৈরি করেছেন, যার মাধ্যমে বিমানযোগে বিশ্বজুড়ে এই মারণজীবাণু সংক্রমণের গতি-প্রকৃতি বিশ্লেষণ করা সম্ভব। সেই বিচারে সংক্রমণে সক্রিয় ভূমিকা নেওয়া ৩০টি দেশকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। সেই তালিকারই ১৭ নম্বরে স্থান পেয়েছে ভারত।
চিন ছাড়া থাইল্যান্ড, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া এই তালিকার শীর্ষে স্থান পেয়েছে। ভারতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি রয়েছে দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের। এর পরেই ঝুঁকিবহুল হিসেবে নাম রয়েছে মুম্বই ও কলকাতা বিমানবন্দরের।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাসের গ্রাসে জাহাজ, উদ্ধার পেতে ফেসবুকে আর্জি বাংলার বিনয়ের
গবেষক দলের প্রধান ডার্ক ব্রকম্যান অবশ্য জানিয়েছেন, এই মডেল ব্যবহার করে রোগ ছড়িয়ে পড়ার নির্ভুল পূর্বাভাস সম্ভব নয়।
তাঁর কথায়, ‘এই মডেল ব্যবহার করে পরিমাণগত পূর্বাভাস করা সম্ভব নয়। স্বাস্থ্যকর্মী ও জনস্বাস্থ্যনীতি প্রণয়নকারীদের নিজেদের পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা বাড়াতে হবে কারণ এই ভাইরাসের খুঁটিনাটি এখনও বহুলাংশে অজানা। তবে যে কোনও মডেল অনুসরণ করলেই বিপদ সম্পর্কে আগাম জানার ক্ষমতা তৈরি হয়ে যায়।’

এ পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, মোট ১,৪৮৬টি নমুনা পরীক্ষা করেছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের অধীনে থাকা গবেষণাগারগুলি। তার মধ্যে মাত্র তিনটি নমুনায় মারণভাইরাসের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।
শনিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, নোভেল করোনাভাইরাস (2019-nCoV) আক্রান্ত প্রথম তিন ভারতবাসী আপাতত রোগমুক্ত হয়েছেন। তবু ঝুঁকি না নিয়ে তাঁদের ২৮ দিন আইসোলেশনে রাখা হচ্ছে।
গত শুক্রবার চিনের হুবেই থেকে কেরালাবাসী ১৫ জন পড়ুয়া এয়ার এশিয়ার বিমানে কোচিতে ফিরেছেন। বিমানবন্দরেই তাঁদের পরীক্ষা করার পরে স্টেরিলাইজড অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে কলামাশেরি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভরতি করা হয়। সেখানে পরীক্ষায় তাঁদের শরীরে জীবাণু না মিললে ছেড়ে দেওয়া হবে।দেশের ২১টি বিমানবন্দরে চিন, থাইল্যান্ড, হংকং ও সিঙ্গাপুর ফেরত মোট ১.৭৬,৭০৩ যাত্রীর শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি খুঁজে দেখতে মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক কালে চিন ভ্রমণ করেছেন, এমন প্রায় ৮,০০০ ব্যক্তির উপরেও নজর রাখছে প্রশাসন।