তাহলে কি সত্যিই উহানের ভাইরাস ল্যাব থেকে 'দুর্ঘটনাবশত' ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস? আমেরিকা একটি অভ্যন্তরীণ কূটনৈতিক কেবল প্রকাশ্য আনার পর তুঙ্গে উঠল সেই জল্পনা।
২০১৮ সালের জানুয়ারিতে পাঠানো সেই কেবলের আগেই উহানের ওই ল্যাবে ঘুরে দেখতে গিয়েছিলেন চিনে মার্কিন দূতাবাসের আধিকারিকরা। সেই বার্তায় উদ্বেগ প্রকাশ করে জানানো হয়েছিল, সেইরকম বিপজ্জনক গবেষণাগারে সুরক্ষিতভাবে কাজ করার জন্য উপযুক্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীর ব্যাপক অপ্রতুলতা রয়েছে। চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত হওয়া সেই কেবলে আধিকারিকরা জানিয়েছিলেন, বাদুড়ের দেহে সার্সের মতো যে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়, তা নিয়ে শুধু গবেষণা চালাতে পারে ল্যাবটি। মানবদেহে প্রাপ্ত করোনাভাইরাসের গবেষণার জন্য নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতির প্রয়োজন আছে।
তবে সেই ল্যাব থেকেই করোনা ছড়িয়ে পড়েছিল কিনা, তা কেবলের মাধ্যমে যেমন প্রমাণিত হয়নি, তেমন উড়িয়ে দেওয়াও হয়নি। বিষয়টি নিয়ে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ইনফেকশন অ্যান্ড ইমিউনিটির অধিকর্তা ইয়ান লিপকিন বলেন, ‘ইচ্ছাকৃতভাবে বা অজান্তেই ছড়িয়ে পড়েছিল কিনা, তার স্বপক্ষে কোনও প্রমাণ দেখতে পাচ্ছি না। আপনি দুম করে বলতে পারেন না যে কেউ একজন দুর্ঘটনাবশত ভাইরাস ছড়ানোর জন্য দায়ী, আপনাকে সেটা প্রমাণ করতে হবে।’
ইতিমধ্যে গত মে'তে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন, চিনা গবেষণাগার থেকেই যে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত তিনি। মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেও আবার দাবি করেন, চিনা ল্যাব থেকে ভাইরাস ছড়ানোর প্রচুর প্রমাণ আছে। যদিও সেই তত্ত্বে জল ঢেলে দেয় খোদ মার্কিন গোয়েন্দা মহল। জাতীয় গোয়েন্দার সংস্থার অধিকর্তার কার্যালয়ের তরফে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়, সংক্রমিত পশুদের মাধ্যমে মহামারী শুরু হয়েছে নাকি উহানের ল্যাব থেকে দুর্ঘটনার জেরে ছড়িয়ে পড়েছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
তারপর থেকে ল্যাব তত্ত্ব নিয়ে খুব একটা সুর চড়ায়নি ট্রাম্প প্রশাসন। তবে মহামারীর জন্য চিনকে দায়ী করার নীতি থেকে সরেনি ওয়াশিংটন। বরং চিনকে মহামারীর দায় এড়ানোর জন্য সহায়তার অভিযোগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা হয়েছে। এমনকী ট্রাম্প এবং পম্পেও অসংখ্যবার করোনাভাইরাসকে ‘চিনা ভাইরাস’ ও ‘উহান ভাইরাস’ হিসেবেও অভিহিত করেছেন।