লকডাউনের চতুর্থ দিনে ভারতে Covid-19 আক্রান্তের সংখ্যা ৯১৮ এবং সংক্রমণের জেরে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৯। সংক্রমণের তৃতীয় পর্বে প্রবেশ করেছে দেশ, এমন আশঙ্কা ভিত্তিহীন, জানাল প্রশাসন।
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ২১ দিনের লকডাউন আরোপ করেছে কেন্দ্র। সেই সঙ্গে ঘোষণা করা হয়েছে বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ।
মহামারীর তৃতীয় পর্যায়, অর্থাৎ সামাজিক সংক্রমণ যে শুরু হয়ে গিয়েছে, তা মানতে চায়নি দ্য ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল কাউন্সিল, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক এবং Covid-19 টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা।
শনিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে আইসিএমআর-এর শীর্ষ কর্তা আর গঙ্গা কেতকর জানিয়েছেন, 'যথেষ্ট ও উপযুক্ত প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত আমরা পরিস্থিতির অতিরিক্ত ব্যাখ্যা করব না'
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, বর্তমানে দেশে নমুনা পরীক্ষা করার অনেক সুবিধা বেড়েছে এবং টেস্টিং কিটও সুলভ হয়েছে। সেই কারণে সংক্রমণে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি বা হ্রাস পেলে তা সঙ্গে সঙ্গে জানা যাবে।
চিন, ইতালি ও ব্রিটেন ইতিমধ্যে মহামারীর তৃতীয় পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে এবং তীব্র হারে সংক্রমণের শিকার হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই তিন দেশে লাফিয়ে বেড়েছে মৃতের সংখ্যাও।
দেখে নেওয়া যাক, মহামারীর চারটি পর্যায়ের বৈশিষ্ট:
প্রথম পর্যায়
এই সময় সংক্রামিত দেশ থেকে জীবাণু বহন করে আনা হয়। এই পর্বে স্থানীয় সংক্রমণের ঘটনা দেখা যায় না। রোগ ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতা খুবই কম থাকে।
দ্বিতীয় পর্যায়
এই সময় স্থানীয় সংক্রমণ ঘটতে শুরু করে। সংক্রমণের উৎস চিহ্নিত করা যায়। এই পর্যায়ে বহিরাগতদের সংস্পর্শে এসে সংক্রামিত হন স্থানীয়রা। সংক্রমণ ঘটে মূলত বহিরাগতের পরিবারের সদস্য, পরিচিতজন এবং তাঁদের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে। দ্বিতীয় পর্যায়ে সংক্রমণ ঘটে তুলনায় কম মানুষের মধ্যে। স্বেচ্ছা নির্বাসনের মাধ্যমে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রনে রাখা সম্ভব হয়।
তৃতীয় পর্যায়
এই পর্যায়ে শুরু হয় সামাজিক স্তরে সংক্রমণ। এই সময় সংক্রমণের উৎস খুঁজে বের করা অসম্ভব হয়ে পড়ে এবং সেই কারণেই আইসোলেশনে রাখাও সম্ভব হয় না। এই পর্বে যাঁদের বিদেশ ভ্রমণের কোনও অভিজ্ঞতা নেই অথবা যাঁরা সংক্রামিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসেননি, তাঁদের দেহেও জীবাণুর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। সামাজিক সংক্রমণ একবার চালু হয়ে গেলে তা অতি দ্রুত হারে ছড়াতে থাকে।বর্তমানে সিঙ্গাপুর, ইতালি ও স্পেন এই পর্যায়ে রয়েছে।
চতুর্থ পর্যায়
সংক্রমণের সবচেয়ে ভয়াবহ এই পর্বে জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন সম্প্রদায় ও গোষ্ঠীর মধ্যে। ফলে অচিরেই তা মহামারীর আকার ধারণ করে। প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক সংক্রামিত হতে থাকেন এবং রোগ প্রতিরোধ করা এককথায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। চিন ইতিমধ্যে এই পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে।