যতদিন না ব্রিটেনে ছাড়পত্র পাচ্ছে অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকা, খুব সম্ভবত সেটা আসবে না ভারতে। ইতিমধ্যেই ভারতে জরুরি ভিত্তিতে অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছে সেরাম ইনস্টিটিউট অক্সফোর্ড টিকার জন্য। কিন্তু ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা মূল্যায়নের সময় ব্রিটেনে নিয়ন্ত্রকদের দেওয়া রিপোর্ট দেখতে চেয়েছেন।
এখনও পর্যন্ত তিনটি ভ্যাকসিন ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেছে। সেরাম ছাড়াও রয়েছে ফাইজার ও দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন। তবে Central Drugs Standard Control Organisation (CDSCO)-এর Subject Expert Committee (SEC) আপাতত কোনও সংস্থাকেই ছাড়পত্র দেয়নি। বুধবার ছিল তাদের প্রথম বৈঠক।
ভারত বায়োটেক এখনও পর্যন্ত প্রথম ও দ্বিতীয় দফার ট্রায়ালের তথ্য জমা দিয়েছে। তাদের তৃতীয় দফার ট্রায়ালের তথ্য দিতে বলেছে কমিটি। ফাইজার কমিটির কাছে প্রেজেন্টেশনের জন্য আরেকটু সময় চেয়েছে। তাদের সেই সময় মঞ্জুর করেছে কমিটি। অন্যদিকে সেরামকে ব্রিটেন ও ভারতের ডেটা দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে ব্রিটেনে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের জন্য তারা যে আবেদন করেছেন, সেটার ফলাফলও তাদের জমা দিতে বলেছেন বিশেষজ্ঞরা।
জানা গিয়েছে ভারত বায়োটেকের তৃতীয় দফার জন্য স্বেচ্ছাসেবক নেওয়ার কাজই শুরু হয়েছিল ১১ নভেম্বর। টিকা নেওয়ার ৪২ দিন বাদে শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। ফলে তারপরেই তারা তথ্য দিতে পারবে কমিটির কাছে।
অন্যদিকে ব্রিটেনের Medicines and Healthcare products Regulatory Agency (MHRA)-র মুখ্য অধিকর্তা জুন রেইন জানিয়েছেন যে কবে অক্সফোর্ড- অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাকে ছাড়পত্র দেওয়া যাবে, সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না। তিনি জানান যে এখনও তথ্য আসছে তাঁদের কাছে, যেগুলি খতিয়ে দেখতে হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রকের কর্তারা জানিয়েছেন যে দুই ঘণ্টার মধ্যেই একটা টিকাকে অনুমোদন দেওয়া যায় না। কমপক্ষে দুই সপ্তাহ লাগবে। এই প্রসঙ্গে ফাইজারের উদাহরণ দেন তাঁরা। ২০ নভেম্বর ব্রিটেনে আবেদন করার পর গত সপ্তাহে তারা ছাড়পত্র পেয়েছে। ২৪ নভেম্বর আমেরিকায় আবেদন করলেও এখনও ছাড়পত্র পায়নি তারা সেখানে।
ফাইজার ভারতে কোনও ট্রায়াল না করালেও বিদেশে তাদের টিকা ৯৫ শতাংশ কার্যকরী হয়েছে। অন্যদিকে ভারতে ১৬০০ জনকে নিয়ে অক্সফোর্ড টিকা নিয়ে ট্রায়াল করছে সেরাম। দুটি ফুল ডোজে ৬২ শতাংশ ও একটি হাফ ডোজের পর একটি ফুল ডোজ নিয়ে কার্যকরীতা হয়েছে ৯০ শতাংশ। অন্যদিকে কিছুটা হলেও মন্থর ভাবে চলছে ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন টিকার প্রস্তুতি। এখনও পর্যন্ত প্রথম ও দ্বিতীয় দফার ট্রায়ালের কাজ শেষ হয়েছে। সেই ডেটা এখনও পাবলিক করেনি তারা। অন্যদিকে ফেজ ৩ ট্রায়ালে এখনও ২৬ হাজারের মধ্যে মাত্র পাঁচ হাজার স্যাম্পেল জোগাড় করতে পেরেছে ভারত বায়োটেক।