বাংলা নিউজ > ঘরে বাইরে > বাংলার দুর্নীতির কথা রটেছে দক্ষিণ ভারতেও, লজ্জায় মাথা হেঁট, 'দিদি ভালো কিন্তু…'

বাংলার দুর্নীতির কথা রটেছে দক্ষিণ ভারতেও, লজ্জায় মাথা হেঁট, 'দিদি ভালো কিন্তু…'

দক্ষিণভারতের রাস্তা।

কন্যাকুমারী কিংবা রামেশ্বরম, একের পর এক হোটেলে বাসন মাজা, খাবার দেওয়ার কাজ করেন বাঙালি যুবকরাই। ২৪ ঘণ্টা কঠোর পরিশ্রম। দম ফেলার ফুরসৎ নেই। দুপুর আর রাতের খাবারটা জুটে যায় হোটেলেই। এরপর সেই টাকা থেকে কিছুটা বাঁচিয়ে তাঁরা পাঠিয়ে দেন বাংলায় থাকা পরিবারের কাছে।

পশ্চিমবঙ্গে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসছে। শিক্ষাক্ষেত্রে ভয়াবহ দুর্নীতি। এমনকী মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য, শিক্ষা দফতরের পদস্থ আধিকারিক সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যও জেলের অন্দরে। আর একের পর এক এই দুর্নীতির জেরে গোটা ভারত জুড়েই মুখ পুড়েছে বাংলার। দক্ষিণভারতের একাধিক রাজ্যে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে বাংলার এই দুর্নীতির প্রসঙ্গ। প্রবাসী বাঙালি যাঁরা কর্মসূত্রে ভিনরাজ্যে থাকেন তাঁরাও নিয়মিত খোঁজ নিচ্ছেন এই দুর্নীতির ব্যাপারে। তামিলনাড়ু, কেরল, পন্ডিচেরি সহ দক্ষিণের একাধিক রাজ্যেই বাংলার এই ভয়াবহ দুর্নীতির প্রসঙ্গে রীতিমতো চর্চা চলছে। কেন বাংলার এই পরিস্থিতি তৈরি হল তা নিয়েও দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকেই খোঁজখবর করছেন অনেকেই। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার পক্ষ থেকে এনিয়ে দক্ষিণ ভারতের একাধিক রাজ্যে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলা হয়েছিল। সেখানে উঠে এসেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

ভারতের দক্ষিণতম স্থান কন্য়াকুমারীতে নাগেরকোল হয়েও যাওয়া যায়।সেখানে এক চায়ের দোকানে বাংলার কথা তুলতেই আধা হিন্দিতে পালটা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন এক তামিল ব্যবসায়ী। বাংলায় যে এত দুর্নীতির কথা বলা হচ্ছে সেটা কি সত্যি?

কন্যাকুমারীতে ভগবতী আম্মা মন্দিরের কাছেই এক হোটেলের ম্যানেজারের স্পষ্ট দাবি, দিদিকে (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) আমরা সৎ বলেই জানি। মনে হয় কোনও ষড়যন্ত্র চলছে। হয়তো মন্ত্রীদের একাংশ দুর্নীতিগ্রস্ত। তবুও আপানাদের মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি আমাদের অনেকের আস্থা আছে। কিন্তু বাস্তবে কি হয়েছে সেটা এতদূর থেকে আমরাও বুঝতে পারি না। তবে যে মাটিতে বিবেকানন্দ জন্মেছিলেন সেখানে এই দুর্নীতি ভাবা যায় না….

কন্যাকুমারী কিংবা রামেশ্বরম, একের পর এক হোটেলে বাসন মাজা, খাবার দেওয়ার কাজ করেন বাঙালি যুবকরাই। ২৪ ঘণ্টা কঠোর পরিশ্রম। দম ফেলার ফুরসৎ নেই। দুপুর আর রাতের খাবারটা জুটে যায় হোটেলেই। এরপর সেই টাকা থেকে কিছুটা বাঁচিয়ে তাঁরা পাঠিয়ে দেন বাংলায় থাকা পরিবারের কাছে। তাঁরাও নিয়মিত খোঁজ নেন বাংলার ব্যাপারে। বার বার মন পড়ে থাকে বাংলার জন্য। কিন্তু ফিরে কী করবেন? কাজ কোথায়? প্রশ্ন তাঁদের।

কাঁথির এক বধূর সঙ্গে দেখা হল কন্যাকুমারীতে। একটি দক্ষিণভারতীয় ধোসার দোকানে বাসন মাজেন তিনি। তাঁর প্রশ্ন, দিদির উপর এখনও আস্থা আছে। কিন্তু বাংলার একের পর এক চুরির কথা আমাদের কানেও আসে। খুব লজ্জা লাগে। দিদি আরও কড়া হওয়া দরকার। নেতারাই সব চুরি করে নিল। আর হয়তো বাংলায় ফেরা হবে না….শাড়ির আঁচল দিয়ে মুখটা একবার মুছে নেন ওই বাঙালি বধূ। কোথাও কি ছলছল করে ওঠে চোখটা?বাড়ির জন্য হয়তো মন কেমন করে, কিন্তু ফেরা কি সম্ভব?

 

বন্ধ করুন