জন্মদাত্রী মা বড় নাকি পালক মা বড়। এই প্রসঙ্গে জন্মদাত্রী মাকেই বেশি গুরুত্ব দিল আদালত। সম্প্রতি কর্নাটক হাই কোর্ট এই ধরনের রায় দিয়েছে। আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, শিশুটিকে জন্মদাত্রী মায়ের স্তন্যপান করানোর অধিকার রয়েছে। জন্মদাত্রী মা আর পালক মায়ের মধ্যে প্রথম জনের দাবি সবচেয়ে বেশি জরুরি।
জন্মের পরে হাসপাতাল থেকে একটি শিশু চুরি হয়ে যায়। তদন্ত শুরু হওয়ার বেশ কিছুদিন পর ওই শিশুটির হদিশ মেলে। এরপর ওই শিশুটিকে দত্তক নেন একটি পরিবার। এদিকে জন্মদাত্রী মা তাঁর সন্তানের খোঁজ পাওয়ার তাঁকে ফেরত পেতে চান। কিন্তু এতেই বেঁকে বসে ওই দত্তক নেওয়া পরিবার। শিশুটিকে ফেরত দিতে অস্বীকার করেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত মামলা গড়ায় আদালত পর্যন্ত। আদালতে দত্তক নেওয়া পরিবারের তরফে আইনজীবী দেবকী–যশোদার প্রসঙ্গ তোলেন। কিন্তু আদালতের তরফে পৌরানিক চরিত্রের ওপর ভিত্তি করে কোনও রায়দানে আমল দেওয়া হয়নি। সেক্ষেত্রে আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, এই ক্ষেত্রে মামলার রায় পূরাণ বা ইতিহাসের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া যায় না।
আদালতের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, স্তন্যপান করানো জন্মদাত্রী মায়ের অধিকার। আবার শিশুর অধিকার মায়ের দুধ পান করা। সংবিধান এই অধিকার দিয়েছে। শিশুটিকে যারা জন্ম দিয়েছেন, তাঁদের গুরুত্ব দেওয়া দরকার। বিনা দোষে শিশুটিকে মাতৃস্তন্য পান থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এরপর পালকের পরিবারের তরফে আদালতের কাছে আর্জি জানানো হয়, তাঁরা নিঃসন্তান। অন্যদিকে জন্মদাত্রী মায়ের আরও দুটি সন্তান রয়েছে। এই কথা বিচার করে অন্তত তাঁদের শিশুটিকে পালনের অধিকার দেওয়া হোক। কিন্তু আদালত তা মানতে রাজি হয়নি। আদালতের মতে, এটা হাস্যকর বক্তব্য। শিশুটি কোনও অস্থাবর সম্পত্তি নয়।