করোনা সংক্রমণের জেরে রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দলে দলে ঘরমুখী শ্রমিকদের দায়িত্বজ্ঞানহীন বলে কটাক্ষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার রোষে পড়লেন প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ বলবীর পুঞ্জ।
পরিবহণের অভাবে দীর্ঘ পথ হেঁটে নিজেদের রাজ্যে ফিরতে তীব্র সংকটের মুখে পড়েছেন দিল্লিতে কর্মরত ভিনরাজ্যের শ্রমিকরা। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বেশ কয়েকজন মহিলা ও শিশু। খাদ্য তো দূরস্থান, অনেক সময় পানীয় জলও তাঁদের জুটছে না। এ হেন পরিস্থিতিতে দুর্গত শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারকে লন্ডন ফেরত করোনা আক্রান্ত শিল্পী কনিকা কাপুরের সঙ্গে তুলনা করেছেন বর্ষীয়ান প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ।
সম্প্রতি টুইটারে তিনি মন্তব্য করেছেন, ‘হাজার হাজার মানুষ তড়িঘড়ি দিল্লি ছাড়ছেন। কনিকা কাপুরও পার্টি দিচ্ছেন। এ সব থেকেই পরিষ্কার হচ্ছে ভারতের খামতি। কাপুর মনে করছেন, তাঁর স্টেটাস তাঁকে ভাইরাসের থেকে বাঁচাবে। ভিনরাজ্যবাসীরা ভাবছেন, তাঁদের সংখ্যাধিক্যই নিরাপত্তা দেবে। দুই দলই দায়িত্বজ্ঞানহীন নাগরিক। ভাইরাস স্টেটাস বা সংখ্যাধিক্যকে সমীহ করে না।’
শুক্রবার সকালেও ভিনরাজ্যের ঘরমুখী কাতারে কাতারে শ্রমিককে দিল্লি-গাজিয়াবাদ সীমান্তে হাঁটতে দেখা গিয়েছে। তাঁদের কেউ কেউ লকডাউন ঘোষণা করার পরে বাড়ি ফিরতে সচেষ্ট হয়েছে, কোন কোনও শ্রমিককে আবার তাঁদের নিয়োগকর্তারাই ছুটিতে পাঠিয়েছেন।
তবে সে সব বোঝার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেননি প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ। উলটে তিনি টুইটারে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘ভিনরাজ্যবাসীরা কেন দিল্লি ছাড়ছেন? অর্থ ও খাদ্যের সন্ধানে? না। স্রেফ দায়িত্বজ্ঞানহীন। বাড়িতে ওঁদের জন্য অর্থ বা খাদ্য অপেক্ষা করছে না। এ আসলে নিজেদের পড়ে পাওয়া ছুটিতে পরিবারের সঙ্গে দেখা করার ও ঘরের কাজ সারার অজুহাত। এখনও পরিস্থিতির গুরুত্ব ওঁরা বুঝতে পারেননি।’
প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাস সংক্রমণ রুখতে দেশজুড়ে ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। সরকারের তরফে মানুষকে নিজের বাড়ির বাইরে বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার জেরে দিল্লি ছেড়ে ঘরে ফিরতে মরিয়া বিপন্ন শ্রমিকদের নিয়ে পুঞ্জের বিরক্তি উপচে পড়েছে।
প্রাক্তন সাংসদের এ হেন উক্তি ঘিরে তীব্র সমালোচনার ঝড় উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। নেট দুনিয়া তাঁর অমানবিক মন্তব্যে ক্ষুব্ধ। কেউ বিরক্তি প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘এই বিজেপি আদর্শবাদীকে দেখুন। উনি মনে করছেন দীর্ঘ পথ হেঁটে লোকে বাড়ি ফিরছে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ফূর্তি করতে। অমানবিকতা ও ঔদ্ধত্যের চূড়ান্ত নিদর্শন। ঈশ্বর ওঁকে সদ্বুদ্ধি দিন।’
আবার কেউ তাঁকে সরাসরি পরামর্শ দিয়েছেন, ‘বসে পড়ুন কাকু, আর নিজেকে আইসোলেশনে রাখুন।’