আজ থেকে দেশে শুরু হয়েছে চতুর্থ দফার লকডাউন। শুধু কনটেনমেন্ট জোন ছাড়া বাকি সব জায়গায় স্বাভাবিক জীবন শুরু করতে বলেছে কেন্দ্রীয় সরকার, অবশ্যই সোশ্যাল ডিস্টেন্সিং মেনে। রাজ্যদের সম্মতি থাকলে চলবে আন্তঃরাজ্য বাস ও গাড়ি। আগে থেকেই চলছে শ্রমিক ও বিশেষ ট্রেন। সেই দিক থেকে ধীরে ধীরে বিধিনিষেধ উঠলেও করোনা পরিস্থিতিতে কিন্তু তেমন কোনও উন্নতি দেখা যাচ্ছে না।
দেশে করোনা আক্রান্ত এখন ৯৬ হাজারের বেশি। সোমবার সকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, করোনায় মৃত ৩০২৯। কিন্তু সবচেয়ে যেটা বড় আশঙ্কার কারণ, সেটি হল ভারতের গ্রামগুলিতে ছড়াচ্ছে করোনা। ১৭ মে অবধি দেশের ৫৫০টি জেলায় করোনা ছড়িয়েছে মোট ৭৩৬-এর মধ্যে। অর্থাত্ দুশোর কম জেলায় এখন করোনা নেই। গত দুই সপ্তাহে প্রায় ১৮০ জেলায় মানুষের শরীরে ধরা পড়েছে কোভিড।
যেসব রাজ্যে করোনা গ্রামে দ্রুত ছড়িয়েছে, তার মধ্যে আছে বাংলাও। মূলত পয়লা মে থেকে শ্রমিক ট্রেনে পরিযায়ীরা বাড়িতে ফিরতে শুরু করায় করোনা ছড়িয়ে পড়ছে বলে সরকারি সূত্রে খবর।এখনও পর্যন্ত মোট করোনা রোগীর ২১ শতাংশ গ্রামে থাকেন। কিন্তু এই সংখ্যা বাড়ছে। অনেকে যারা ফিরছেন, তাদের শরীরে করোনার চিহ্ন নেই, কিন্তু তাদের থেকে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, বলে আশঙ্কা।
বিহারের এক আমলার উদ্বেগ যে সবে তো মাত্র ২০ শতাংশ মানুষ ফিরেছেন, তাতেই রাজ্যের সব জেলা করোনা আক্রান্ত। কোনও রাজ্যেই ২০ শতাংশের বেশি পরিযায়ী ফেরেননি। তাই সবাই ইচ্ছুক যখন ফিরবেন, পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে অনেকের ভয়। ওড়িশার ২০টি জেলা, মধ্যপ্রদেশের ৮০ শতাংশ জেলা, ঝাড়খণ্ডের অর্ধেক জেলায় করোনা ছড়িয়েছে। বাংলার খোদ ২৩ জেলার মধ্যে ১৪টি তে এখনও কনটেনমেন্ট জোন আছে।
দেশের যে সব জেলায় করোনা নেই, সেগুলি অধিকাংশই সাঁওতাল অধ্যুষিত দেশের গরীবতম স্থানগুলি। সেখানে এখনও তেমন টেস্ট হয়নি কারণ কোভিডের খবর সেখান থেকে পাওয়া যায় নি। পরিযায়ীদের ফেরার অতটা চাপ না থাকলেও দ্রুত করোনা ছড়াচ্ছে কর্নাটক, তামিলনাড়ু ও হরিয়ানায়।
তবে এখনও কোভিডের অধিকাংশ কেস আসছে ১২ রাজ্যের ৩০টি বড় শহর থেকে। তার মধ্যে আছে কলকাতা ও হাওড়া। আপাতত দেশে ১৩ দিনে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছে। সেই সংক্রমণের হার যদি বজায় থাকে, এই মাসের শেষেই আক্রান্তের সংখ্যা দুই লক্ষের কাছাকাছি যেতে পারে। তারমধ্যে গ্রামীন ভারত থেকে কত কেস থাকে, সেটাই দেখার।