ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৩০০,০০০ ছুঁইছুঁই। আক্রান্তের সংখ্যার দৈনিক বৃদ্ধির নিরিখেও প্রায় প্রতিদিন নয়া রেকর্ড তৈরি হচ্ছে। স্বভাবতই দেশে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়েছে কিনা, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে জল্পনা চলছিল। কিন্তু সেই জল্পনা উড়িয়ে দিল ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে গোষ্ঠী সংক্রমণ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে আইসিএমআরের ডিরেক্টর জেনারেল বলরাম ভার্গব বলেন, 'এই গোষ্ঠী সংক্রমণ নিয়ে খুব বিতর্ক চলছে। কিন্তু আমার মনে হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও (হু) এটার কোনও সংজ্ঞা দেয়নি। আমরা মনে রাখতে হবে, ভারত এত বড় দেশে এবং প্রাদুর্ভাব এত কম। ছোটো জেলায় এক শতাংশেরও কম প্রাদুর্ভাব পাওয়া গিয়েছে। শহরাঞ্চল এবং কনটেনমেন্ট এলাকায় সেটা সামান্য বেশি হতে পারে। কিন্তু ভারত নিশ্চিতভাবে গোষ্ঠী সংক্রমণের পর্যায়ে নেই। আমি এটা জোর দিয়ে বলতে চাই।'
যদিও দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। সংক্রামিতের নিরিখে ব্রিটেনের আরও কাছে এল ভারত। যে ব্রিটেন বিশ্বের সর্বাধিক করোনা প্রভাবিত দেশের তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকাল আটটা পর্যন্ত ভারতে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২,৮৬,৫৭৯। যা ব্রিটেনের থেকে মাত্র কয়েক হাজার কম। জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসেব অনুযায়ী ব্রিটেনে এখনও পর্যন্ত মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৯১,৫৮৮।
পাশাপাশি, গত ১০ দিনে রোজই নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছেন প্রায় ১০,০০০ জন। অর্থাৎ ওই সময়ের মধ্যে দেশের মোট করোনা আক্রান্তের এক-তৃতীয়াংশের হদিশ পাওয়া গিয়েছে। মৃতের সংখ্যাও ৮,০০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। তারইমধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর নয়া রেকর্ড তৈরি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় (বুধবার সকাল আটটা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল আটটা) দেশে ৩৫৭ জন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। ফলে বৃহস্পতিবার সকাল আটটা পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮,১০২।
যদিও তুলনামূলক পরিসংখ্যান তুলে ধরে আইসিএমআরের তরফে জানানো হয়েছে, প্রতি ১০ লাখে সবথেকে করোনা আক্রান্তের হদিশ মিলেছে ভারত (২০.৭৭)। একইভাবে প্রতি ১০ লাখ জনসংখ্যা মৃত্যুর হারও ভারতে অন্তত কম - ০.৫৯। যেখানে রাশিয়া, তুরস্ক, জার্মানি, আমেরিকা, ব্রিটেনের মতো দেশে সেই হার ঢের বেশি।
তা সত্ত্বেও অবশ্য করোনা মোকাবিলায় কোনওরকম ঢিলেমি দিতে রাজি নয় কেন্দ্র। আইসিএমআরের তরফে বলা হয়েছে, ‘আমাদের নমুনা পরীক্ষা এবং সংস্পর্শে আসা লোকদের খুঁজে যেতে পারে, উপযুক্ত নজরদারি বজায় রাখতে হবে, কনটেনমেন্ট কৌশল রূপায়ণ করতে হবে। কোনওভাবেই রাশ আলগা করা যাবে না।’