করোনাভাইরাস সংক্রমণের জেরে সরকারি ও বেসরকারি নানান সংস্থার কর্মীদের আপাতত বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের কেউ কেউ তাতে খুশি হলেও বিভিন্ন অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন অনেকে।
হরিয়ানার এক টালি প্রস্তুতকারী সংস্থার সিইও সঞ্জয় বাত্রার মতে, ‘বাড়ি থেকে কাজ করলে কর্মীদের যাতায়াতের খরচ বাঁচে। ধীরেসুস্থে ইচ্ছেমতো রান্না করা যায়। বাড়ির আরামদায়ক পোশাক পরেই কাজে বসা যায়।’
বাড়িতে বসে কাজ করা মানেই আরামদায়ক, এমন মনে করেন না সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হেমা। এর প্রধান কারণ বাড়িতে বাচ্চা দেখাশোনার সমস্যা। তাঁর কথায়, ‘অফিস যাওয়ার জন্য শিশুর দেখভালের দায়িত্ব থাকে তার আয়ার উপরে। সংক্রমণের জেরে তিনি এখন আমার বাড়ি আসতে পারছেন না বলে অফিসের কাজ সামলে বাচ্চার দেখাশোনা করা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এই স্ট্রেস ক্রমে অসহনীয় হয়ে উঠছে।’
যে সমস্ত দম্পতি স্বামী-স্ত্রী দুজনেই রোজগারের জন্য বাড়ির বাইরে থাকেন, ওয়ার্ক ফ্রম হোম তাঁদের কাছে প্রায়ই সমস্যা তৈরি করে। আইটি সংস্থার চাকুরে অনিরুদ্ধে বলেন, ‘বাচ্চারা বাড়িতে থেকে অফিসের কাজ করার বিষয়টি বোঝে না। তারা যাখন বাবা-মাকে বেশিক্ষণ বাড়িতে দেখে, তাদের পক্ষে স্থির হয়ে বসে থাকা অসম্ভব হয়ে ওঠে। যাই হোক, শেষ পর্যন্ত পরিবারের জন্য বেশ কিছুটা সময় দেওয়া যায়।’
ঘরে বসে কাজ করা অন্যদের চোখে ঢিলেঢালা ব্যাপার হলেও ভুক্তভোগীরা জানেন তাঁরা কর্তৃপক্ষের শ্যেন নজরে রয়েছেন, যেখানে ফাঁকিবাজির কোনও সুযোগ নেই। আইটি সংস্থার কর্মী আমন জানিয়েছেন, তাঁর ল্যাপটপে এমনই একটি অ্যাপ ইনস্টল করতে হয়েছে যার মারফৎ পাঁচ মিনিটের জন্য কাজ থেকে উঠলেও সঙ্গে সঙ্গে তা কর্তৃপক্ষের চোখে পড়ে যায়। ওই অ্যাপই হিসেব কষে প্রতিদিন তিনি কতক্ষণ অফিসের কাজ করছেন।
তবে কারও কারও মতে এই সময় অফিস গিয়ে সংক্রমণের ঝুঁকি না বাড়িয়ে বাড়ির নিরাপদ আবহে থেকে কাজ করার জন্য কড়াকড়ি মেনে নিতে বিশেষ অসুবিধে নেই।
আবার বেসরকারি সংস্থার বর্ষীয়ান আধিকারিক বিজু জানিয়েছেন, সংস্থা প্রস্তাব দিলেও ঘরে বসে অফিসের কাজ করা তচাঁর পক্ষে অত্যাচার বিশেষ। এই কারণে তিনি টানা ১৫ দিনের ছুটি নিয়ে লকডাউন উপভোগ করছেন।
বেসরকারি মিডিয়া সংস্থার কর্মী রৌনক অবশ্য ওয়ার্ক ফ্রম হোম ব্যবস্থা যথেষ্ট উপভোগ করছেন বলে জানিয়েছেন। তাঁর মতে, কাজের ফাঁকে সিনেমা দেখার শখ বাড়িতে বসেই পূর্ণ করা সম্ভব।