করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন একের পর এক চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী। তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক। আশঙ্কার সুরে তিনি জানান, করোনা মোকাবিলায় রাজ্যের পদক্ষেপে কোথাও ফাঁকের ইঙ্গিত করছে এই ঘটনাগুলি।
গত মঙ্গলবার এইমস ভুবনেশ্বরের চার চিকিৎসকের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। তাদের মধ্যে তিনজন সার্জারি, প্যাথোলজি ও ফার্মাকোলজি বিভাগের সিনিয়র চিকিৎসক এবং একজন ডার্মাটোলজি বিভাগের জুনিয়র চিকিৎসক। করোনা ওয়ার্ডের সঙ্গে যুক্ত না থাকলেও তাঁরা সংক্রামিত হয়েছেন। অন্যদিকে, তিনজন সিনিয়র চিকিৎসক হোম কোয়ারান্টাইনে রয়েছেন। কারণ তাঁরা যে এলাকার বাসিন্দা, সেগুলিকে কনটেনমেন্ট জোন হিসেবে ঘোষণা করেছে ভুবনেশ্বর পুরনিগময
তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'গত কয়েক সপ্তাহে স্বাস্থ্যকর্মীদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় আমি চিন্তিত। এটা করোনা মোকাবিলার পদক্ষেপে সম্ভাব্য কোনও ফাঁকের ইঙ্গিত করছে। আমি আবারও জোর দিয়ে বলতে চাই, আপনারা (স্বাস্থ্যকর্মীরা) এই দীর্ঘ যুদ্ধের শক্তি। দয়া করে প্রথমে নিজেদের এবং নিজেদের টিমের সুরক্ষা নিশ্চিত করুন।'
তিনদিন আগে বহরমপুর টাউনের এমকেসিজি মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের চারজন অ্যানেস্থেশিয়ালজিস্টের শরীরে করোনার অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছিল। রৌরকেল্লা জেনারেল হাসপাতালের দুই চিকিৎসকও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। গত ১৫ দিনের মধ্যে কটক, নয়াগড় এবং আঙ্গুল জেলার একজন করে চিকিৎসক সংক্রামিত হয়েছেন।
ওড়িশা মেডিক্যাল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের অভিযোগ, যে হাসপাতালগুলিতে করোনার চিকিৎসা হয় না, সেই হাসপাতালগুলির চিকিৎসক এবং নার্সরা অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। তাঁদের পার্সোনাল প্রোটেক্টিভ ইক্যুপমেন্ট (পিপিই) নেই। অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নারায়ণ রাউতের দাবি, প্রত্যেক স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে পাঁচটি এন-৯৫ মাস্ক দিতে হবে। থাকতে হবে পর্যাপ্ত পিপিই।
স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যেও বেড়েছে সংক্রমণ। এখনও পর্যন্ত এমকেসিজি মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের ১৩ জন নার্স করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়াও আশাকর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, সাফাইকর্মী, কোয়ারেন্টাইনে কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা শিক্ষকও করোনার কবলে পড়েছেন। আধিকারিকরা জানিয়েছেন, চিকিৎসক-সহ মোট ৫৮ জন স্বাস্থ্যকর্মী চিকিৎসক সংক্রামিত হয়েছেন। কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক পঞ্চায়েত প্রধানেরও করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে।
তারইমধ্যে স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্দেশে পট্টনায়েক বলেন, ‘আমাদের সামনের সারির দুর্দান্ত কর্মীদের সংক্রমণ রুখতে এবং আমাদের স্বাস্থ্য কাঠামোয় মানুষের বিশ্বাস বজায় রাখতে এই নিয়মগুলি (করোনা মোকাবিলার নিয়ম) কঠোরভাবে মেনে চলা এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সংক্রমণ রোধ করার পদক্ষেপ এবং সতর্কতার সঙ্গে স্বাস্থ্য ক্ষেত্র ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষাবিধি নিশ্চিত করা আমাদের মিলিত দায়িত্ব।’