করোনা সংক্রমণে লাগাম দিতে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া তবলিঘি জামাত কর্মীদের খুঁজে বের করতে কালঘাম ছুটেছে পুলিশ ও স্বাস্থ্যকর্মীদের। এ পর্যন্ত ৯,০০০ কর্মীর সন্ধান পাওয়া গেলেও আধিকারিকরা বলছেন, এ শুধু হিমশৈলের চূড়ামাত্র।
ঘটনার সূত্রপাত দিল্লির নিজামুদ্দিন এলাকায় তবলিঘি জামাত কর্মীদের জন্য নির্দিষ্ট আশ্রয় ছয় তলা মরকজ ভবন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ধর্মীয় প্রচারের উদ্দেশে এখানেই এসে প্রথমে উঠেছিলেন বিদেশ থেকে আগত ৯৬০ জন কর্মী। তাঁদের মধ্যে অনেকেই এসেছিলেন ইরান ও কাজাখস্তানের মতো করোনা আক্রান্ত দেশ থেকে। এই মরকজ থেকেই পরে ধর্ম প্রচারের উদ্দেশে সারা ভারতে ছড়িয়ে পড়েন জামাত কর্মীরা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৯,০০০ জামাতকর্মীকে চিহ্নিত করতে পেরেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।

মুশকিল দেখা দিয়েছে মরকজ-এর অতিথি তালিকায় দেওয়া তথ্য নিয়ে। সেখানে বহু বিদেশি অতিথিরই পাসপোর্ট-সহ বেশ কিছু তথ্যে অসঙ্গতি দেখা গিয়েছে। বানান ভুলের কারণেও সম্ভাব্য করোনা আক্রান্তদের হদিশ পেতে সমস্যা দেখা যাচ্ছে।
সমস্যার সমাধানে দেশের ৭০০ এর বেশি জেলাজুড়ে ছড়িয়ে থাকা জামাত কেন্দ্রগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা দেখা দিয়েছে ভারতের অসংখ্য জামাত সমর্থকদের নিয়ে।
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জামাতের জমায়েতে উপস্থিত থেকেছেন লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি। এক আধিকারিকের কথায়, ‘কার সঙ্গে কবে কোথায় কোন সংক্রামিত ব্যক্তির দেখা হয়েছিল, কে কার সংস্পর্শে এসেছেন, তা খতিয়ে দেখা এককথায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়াচ্ছে।’ তবু লকডাউন জারি থাকায় এখনও পর্যন্ত কিছু আশার আলো দেখা যাচ্ছে বলে তাঁর দাবি।
শুধুমাত্র ভারতই তবলিঘি জামাতের মতো জমায়েতের দরুণ লাগামছাড়া সংক্রমণের শিকার হয়নি। প্রতিবেশী পাকিস্তানে মার্চের গোড়ায় এই গোষ্ঠীর ধর্মীয় সম্মেলনে ২,৫০,০০০ লোক অংশগ্রহণ করেছিলেন। সেখানে জীবাণু বয়ে আনা হয়েছিল সুদূর প্যালেস্তাইন ও কিরঘিস্তানের মতো দেশ থেকে।
একই মাসে মালয়েশিয়ায় জামাতের জমায়েত থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। সে দেশের ৩,০০০ রোগীর মধ্যে ছয়শোর বেশি জামাতের সভায় অংশগ্রহণ করেছিলেন বলে জানা গিয়েছে।