করোনা সংক্রমণের সন্দেহে কলকাতা ফেরৎ মৃত ওড়িশার শ্রমিকের দেহ সৎকার করতে না দেওয়ায় বাধ্য হয়ে তাঁকে সমাধিস্থ করল পরিবার।
গত ৩০ মার্চ কলকাতা থেকে বাড়ি ফিরেছিলেন বালেশ্বর জেলার শিমুলিয়া ব্লকের খাটানগর গ্রামের বাসিন্দা ৪৫ বছর বয়েসি শ্রীধর দালেই। ১৪ দিন বাড়িতে কোয়ারেন্টাইন থাকার পরে তাঁর শরীরে Covid-19 এর কোনও উপসর্গ দেখা দেয়নি।
গত বৃহস্পতিবার তাঁর হঠাৎ সর্দি-কাশি দেখা দেয়। নানান ওষুধ খেয়েও উপসর্গ দূর না হলে তাঁকে বালেশ্বর শহরের সদর হাসপাতালে ভরতির জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু পথেই তাঁর মৃত্যু হয়।
এর পরেই তিনি করোনা সংক্রমণের শিকার হয়েছিলেন বলে সন্দেহ দেখা দেয় গ্রামবাসীদের মনে। প্রসঙ্গত, মার্চ মাসে পশ্চিমবঙ্গ থেকে তাঁর সঙ্গে ফিরে আসা এক ব্যক্তি করোনা পজিটিভ প্রমাণিত হওয়ায় আশঙ্কার পারদ চড়ে। যদিও শ্রীধরের মৃত্যুর কারণ হিসেবে হেপাটিক কোমা ও জন্ডিসকেই দায়ী করেছেন শিমুলিয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক চিকিৎসক বিজয় পণ্ডা।
রবিবার রাতে শ্রীধরের দেহ গ্রামে ফিরলে দাহ করার জন্য সাহায্য করতে এগিয়ে আসেননি কোনও গ্রামবাসী। অনেক পীড়াপীড়িতেও মৃতের স্ত্রীয়ের অনুরোধ শোনেননি কেউ। বাধ্য হয়ে শেষ পর্যন্ত নিজেরাই দেহ সমাধিস্থ করেন শ্রীধরের পরিবার।
শিমুলিয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক জানিয়েছেন, যে হেতু মৃতের সোয়্যাব পরীক্ষা করা হয়নি, সেই কারণে তাঁর পরিবারের সদস্যদের সকলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হবে। সেই মতো মঙ্গলবার খাটানগর গ্রামে স্বাস্থ্য শিবির পরিচালনা করা হয়েছে। সংদগ্রহ করা হয়েছে মৃতের পরিবার ও প্রতিবেশীদের সোয়্যাব নমুনা।
উল্লেখ্য, গত ২৭ এপ্রিল কন্টেইনমেন্ট জোনের কাছাকাছি থাকা করোনা সংক্রমিত এক বাসিন্দাকে বহু চেষ্টা করেও ভুবনেশ্বরের কোনও হাসপাতালে ভরতি করতে না পারায় তাঁর মৃত্যু হয়। বাড়িওয়ালা তাঁদের ঢুকতে না দিলে মৃতদেহ নিয়ে সারারাত রাস্তায় বসে থাকতে হয় মৃতের স্ত্রী ও মেয়েকে।