এগারো দিনে এসেছে ৯২,০০০-এর বেশি ফোন। সবারই একটাই আকুতি - নির্যাতন ও অত্যাচার থেকে বাঁচান। শিউরে ওঠার মতো এমনই তথ্য প্রকাশ করলেন শিশুদের জন্য সরকারের হেল্পলাইন - চাইল্ডলাইন ইন্ডিয়া হেল্পলাইনের আধিকারিকরা।
আরও পড়ুন :করোনার পরিপ্রেক্ষিতে Class 10-12 পরীক্ষা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিল CBSE
সংস্থার সহ-অধিকর্তা হারলিন ওয়ালিয়া জানান, গত ২০ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত 'চাইল্ডলাইন ১০৯৮' নম্বরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৩.০৭ লাখ ফোন এসেছিল। তার মধ্যে ৩০ শতাংশ (৯২,১০৫) ক্ষেত্রে নির্যাতন ও অত্যাচার থেকে শিশুদের রক্ষা করার আকুতি জানিয়ে ফোন করা হয়েছিল। হারলিন জানিয়েছেন, ২৫ মার্চ থেকে লকডাউন শুরুর পর ফোনের সংখ্যা ৫০ শতাংশ বেড়েছে।
আরও পড়ুন :আজকের অগ্নীশ্বর! বিপন্ন প্রসূতিকে সন্তান ভূমিষ্ঠ করতে একাহাতে সাহায্য চিকিৎসকের
যে ওয়ার্কশপ চলাকালীন এই পরিসংখ্যান করা হয়, সেখানে ছিলেন নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রকের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। এছাড়া আরও অন্য কারণে ফোন এসেছে। যেমন - স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে ১১ শতাংশ ফোন এসেছিল। শিশু শ্রম, নিখোঁজ ও পালিয়ে যাওয়া শিশু এবং অনাথ শিশুদের বিষয়ে যথাক্রমে আট, আট ও পাঁচ শতাংশ এসেছিল। করোনা নিয়ে ১,৬৭৭ ও অসুস্থ শিশুদের সাহায্যের জন্য ২৩৭ টি ফোন এসেছিল।
আরও পড়ুন : Covid-19: দশ দিনে PF অ্যাকাউন্ট থেকে ২৮০ কোটি টাকা তুলেছেন লক্ষাধিক ভারতীয়
হারলিনের মতে, লকডাউনের সময় শিশুদের হেল্পলাইন জরুরি পরিষেবা হিসেবে ঘোষণা করা উচিত। শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করা একাধিক সংগঠন ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চিঠি লিখেছে। তাদের দাবি, ১০৯৮-কে টোল ফ্রি হিসেবে ঘোষণা হোক। একইসঙ্গে শিশু বা অভিভাবক বা কেয়ার গিভারদের জন্য ১০৯৮-কে জরুরি নম্বর করার আর্জি জানানো হয়েছিল।
আরও পড়ুন : করোনা রুখতে বাড়িতেই মাস্ক তৈরি করুন, শিখে নিন ধাপে ধাপে পদ্ধতি
একটি যৌথ বিবৃতিতে গত ২ এপ্রিল ছ'টি শিশু উন্নয়ন সংগঠনের তরফে বলা হয়, 'সংকটের তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘকালীন প্রভাব কাটাতে দুর্বল শিশু ও গরীব পরিবারদের জরুরি ভিত্তিতে স্বাস্থ্য পরিষেবা, পুষ্টি, খাদ্য সুরক্ষা, মানসিক স্বাস্থ্য ও মানসিক সহায়তা, নির্যাতনের বিরুদ্ধে সুরক্ষা, সামাজিক সুরক্ষা, শিশুকেন্দ্রিক অর্থ সাহায্যের উদ্যোগ সরকারের নিশ্চিত করা উচিত।'
আরও পড়ুন : এমন কিংবদন্তি প্রজন্মে একজনই আসেন, ধোনির অবসর প্রসঙ্গে সমর্থকদের সতর্ক করলেন নাসের
তবে শুধু শিশুরা নয়, লকডাউনের সময়ে নির্যাতনের মাত্রা বেড়েছে মহিলাদের উপরও। যে মহিলারা গার্হস্থ্য হিংসার শিকার, তাঁদের উপর অত্যাচার আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা জানান, লকডাউন শুরুর পর থেকে প্রতিদিন গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগের সংখ্যা বাড়ছে। গত ২৪ মার্চ থেকে ১ এপ্রিল পর্যন্ত মহিলাদের নির্যাতনের ২৫৭ টি অভিযোগ পেয়েছে মহিলা কমিশন। তার মধ্যে ৬৯ টি অভিযোগ গার্হস্থ্য হিংসা সংক্রান্ত। রেখা জানান, আদতে সেই সংখ্যাটা আরও বেশি। কিন্তু নির্যাতনকারীরা সারাক্ষণ বাড়িতে থাকায় অভিযোগ দায়ের করার সাহস পাচ্ছেন না মহিলারা। পাশাপাশি আগে এরকম ঘটনা হলে বাবার বাড়িতে যেতে পারবেন তাঁরা। কিন্তু লকডাউনের কারণে এখন সেই রাস্তাও বন্ধ।
আরও পড়ুন : শীঘ্রই DTH বা কেবল সেট টপ বক্স (STB) না পাল্টে আপনি বদলাতে পারবেন অপারেটর
এভাবে মহামারীর সময়ে শিশু ও নারীদের উপর অত্যাচারের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রসংঘের নারী এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর। শিশু ও নারীদের উপর হিংসার ঘটনাকে 'ছায়া মহামারী' (শ্যাডো প্যানডেমিক) হিসেবে চিহ্নিত করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন : Covid-19: লকডাউনে বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের প্রয়োজনে গাড়ি পাঠাবে বিধাননগর পুলিশ