গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়ে যুক্ত দেশের বড় মাপের সংস্থাগুলির কর্মীদের Covid-19 ভ্যাক্সিন দেওয়ার জন্য অনুমোদনের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই বিষয়ে টিকা উৎপাদন সংস্থাগুলির সঙ্গে চুক্তি নিয়েও পরিকল্পনা চলেছে বলে খবর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি আধিকারিক জানিয়েছেন, ভারতের টিকা পরিকল্পনা খাতে খরচের বেশিরভাগই বহন করবে কেন্দ্রীয় সরকার এবং তা প্রায় ৫০,০০০ কোটি টাকা। তবে ২০২১ সালে ভারতের সব নাগরিককে কোভিড টিকা দেওয়া সম্ভব নয় বলেও বিজ্ঞানীদের সঙ্গে সহমত হয়েছে প্রশাসন।
বড় সংস্থার কর্মীদের টিকাকরণের পরিকল্পনায় প্রধানমন্ত্রীর দফতরের অনুমোদন প্রয়োজন। অনুমোদন পাওয়া গেলে ইন্ডিয়া ইনকর্পোরেটিভ-এর এই বিশেষ শাখা দেশের অতিরী দমন প্রকল্পের অন্তর্গত হবে। প্রকল্পে শামিল স্বাস্থ্যকর্মী, কোমর্বিডিটি যুক্ত রোগী এবং বর্ষীয়ান নাগরিকরা।
এ দিকে অতিমারীর জেরে ভারপতের শিল্প সংস্থাগুলির এক বড় অংশে উৎপাদনের হার ২৩.৯% হ্রাস পাওয়ায় মোদী সরকারের কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলা ও অর্থনীতি নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। গত ১ অক্টোবর থেকে নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি তুলে দেওয়ার আগে মোট চারটি আনলক প্রক্রিয়া ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। তবে শিল্প চালু হলেও চাহিদা কম থাকায় উৎপাদনের ভাটা কাটিয়ে ওঠা যায়নি এখনও।
এই সমস্ত কারণে কোন কোন সংস্থাকে সরাসরি উৎপাদকের থেকে ভ্যাক্সিন কিনতে দেওয়া হবে, তা স্থির করে উঠতে পারেনি সরকার। তবে প্রশাসনিক সূত্রে খবর, পেট্রোলিয়াম, ইস্পাত, ফার্মাকোলজি, সিমেন্ট ও কয়লা ক্ষেত্রগুলিকেই এই ব্যাপারে বেছে নেওয়া হতে পারে। এতে কেন্দ্রের উপর থেকে খরচের পরিমাণও খানিক হালকা হবে। জানা গিয়েছে, এই সমস্ত সংস্থার ভ্যাক্সিন ব্যবহারের সব তথ্যই নজরে রাখবে ও সংরক্ষণ করবে প্রশাসন।
শোনা যাচ্ছে, আগামী বছরের শুরুতে ভারতে সম্ভাব্য ভ্যাক্সিন চালু হতে পারে। এই কারণে বর্তমানে পরিকাঠামোগত ব্যবস্থা মজবুত করাতেই মন দিয়েছে প্রশাসন। এই ব্যাপারে রাজ্য সরকারগুলি, সম্ভাব্য টিকা উৎপাদক সংস্থা এবং অন্য সব পক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
টিকা বিতরণ নিয়ে বিশেষ নজর রাখতে হচ্ছে কারণ বেশ কিছু ভ্যাক্সিন বরফে জমিয়ে সরবরাহ করতে হবে, বাকিগুলি রেফ্রিজারেটরে রাখতে হবে।
ভারতে তৈরি ভ্যাক্সিনগুলির মধ্যে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে অ্যাস্ট্রা জেনেকা সংস্থার তৈরি ভ্যাক্সিন, যা এ দেশে উৎপাদনে সহযোগিতা করছে সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া।
এ ছাড়া, ভারতীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা জাইডাস ক্যাডিলা গত অগস্ট মাসে দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল চালু করেছে। আবার ভারত বায়োটেক সংস্থাও সেপ্টেম্বর থেকে ট্রায়ালের দ্বিতীয় পর্যায় শুরু করেছে।
নীতি আয়োগ সদস্য ডক্টর ভি কে পাল এবং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণের নেতৃত্বে কোভিড ভ্যাক্সিন পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছে কেন্দ্রীয় সরকারের বিশেষজ্ঞ দল। ভারতের পাশাপাশি নজর রাখা হয়েছে আমেরিকা, রাশিয়া, ইজরায়েল ও জার্মানির কোভিড ভ্যাক্সিন প্রস্তুতির উপরে।