ভারতে প্রতি বছর ১০ কোটি স্পুটনিক-ভি কোভিড ভ্যাক্সিনের ডোজ উৎপাদনের উদ্দেশে ভারতীয় ফার্মা সংস্থা হেটেরো-র সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হল রাশিয়ান ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (আরডিআইএফ)। ২০২১ সাল থেকে ভারতে শুরু হবে উৎপাদন প্রক্রিয়া।
সম্প্রতি হেটেরো ল্যাবস লিমিটেডের তরফে আন্তর্জাতিক বিপণন বিভাগের অধিকর্তা বি মূরলী কৃষ্ণ রেড্ডি জানিয়েছেন, ‘কোভিড চিকিৎসায় রাশিয়ার স্পুটনিক-ভি ভ্যাক্সিন উৎপাদনের লক্ষ্যে আরডিআইএফ-এর সঙ্গে আমরা চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। ভারতে ওই ভ্যাক্সিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফলাফলেরজন্য অপেক্ষায় আছি। আমাদের বিশ্বাস, দ্রুত রোগীর কাছে পৌঁছে দিতে হলে স্থানীয় স্তরে টিকা উৎপাদন জরুরি।’
গত ২৪ নভেম্বর মাসে স্পুটনিক-ভি টিকার অভ্যন্তরীণ ট্রায়ালের সদর্থক ফল ঘোষণা করে আরডিআইএফ। রাশিয়ায় মোট ৪০ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের উপরে এই টিকা প্রয়োগ করা হয়।
আরডিআইএফ-এর সিইও কিরিল দিমিত্রেভ এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘আরডিআইএফ ও হেটেরোর-র মধ্যে হওয়া চুক্তি নিয়ে আমরা আনন্দিত। এর জেরে ভারতের মাটিতে কোভিড প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকরী ও নিরাপদ স্পুটনিক-ভি ভ্যাক্সিন উৎপাদন সম্ভব হবে। ভ্যাক্সিনটির অভ্যন্তরীণ ট্রায়ালের রিপোর্টে প্রথম ডোজ নেওয়ার ৪২তম দিনে ৯৬% কার্যকরী প্রমাণিত হয়েছে। হেটেরো-র সঙ্গে চুক্তির সুবাদে এই অতিমারী পরিস্থিতিতে আমরা এবার ভারতীয় নাগরিকদের জন্য উল্লেখযোগ্য হারে টিকা উৎপাদন করতে পারব।’
গত ৯ নভেম্বর থেকে বিশ্বের চার প্রধান ওষুধ উৎপাদক সংস্থা কোভিড প্রতিষেধক ভ্যাক্সিন উৎপাদনের দৌঁড়ে নেমেছে। প্রতিযোগিতায় রয়েছে ফাইজার ও বায়োএনটেক সংস্থার যুগলবন্দি, মার্কিন সংস্থা মডার্না, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার যৌথ উদ্যোগ এবং রাশিয়ার সরকারি সংস্থা গামালেয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউ অফ এপিডেমায়োলজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজি।
আরডিআইএফ-এর দাবি, ‘অনুমোদন পাওয়ার পরে বর্তমানে বেলারুস, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, ভেনেজুয়েলা এবং অন্যান্য দেশে ভ্যাক্সিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের অনুমোদন চলেছে। ভারতে চলেছে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল। পঞ্চাশটিরও বেশি দেশে স্পুটনিক-ভি ভ্যাক্সিনের ১২ কোটির বেশি ডোজ সরবরাহের অনুরোধ এসেছে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সরবরাহের জন্য ভারত, ব্রাজিল, চিন, দক্ষিণ কোরিয়া-সহ একাধিক দেশে আরডিআইএফ-এর সহযোগী সংস্থায় উৎপাদিত হবে।’
প্রসঙ্গত, গত অগস্ট মাসে চূড়ান্ত পর্যায়ের ট্রায়ালের আগেই স্পুটনিক-ভি ভ্যাক্সিন অনুমোদন করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তাঁর এক মেয়েকেও এই টিকা দেওয়া হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।