অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্ভাব্য করোনাভাইরাস টিকা নিয়ে ভারতীয়রা আশায় বুক বেঁধেছিলেন। বিশেষত টিকা উৎপাদনের সঙ্গে সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া (এসআইআই) যুক্ত থাকায় অক্সফোর্ডের ‘ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট’-এর প্রত্যাশা আরও বেড়েছিল। কিন্তু এক স্বেচ্ছাসেবক অসুস্থ হয়ে পড়ার পর সেই সম্ভাব্য টিকার চূড়ান্ত পর্যায়ের ট্রায়াল স্থগিত রাখা হয়েছে। তাতে উদ্বেগ বেড়েছে অনেকের।
তবে অক্সফোর্ডের টিকা ট্রায়াল স্থগিত থাকলেও ভারতের নিজস্ব দুটি ‘ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট’-এর ট্রায়াল জোরকদমে চলছে। সেই সম্ভাব্য প্রতিষেধক আপাতত কোন পর্যায়ে আছে, তা দেখে নিন -
কোভ্যাক্সিন (Covaxin)
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল কাউন্সিলের (আইসিএমআর) সঙ্গে যৌথভাবে 'কোভ্যাক্সিন' (Covaxin) তৈরি করেছে ভারত বায়োটেক। ইতিমধ্যে সেটির দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এই পর্যায়ে দেশের ৩৮০ জন স্বেচ্ছাসেবকের উপর টিকার পরীক্ষা করা হবে।
আজ (বুধবার) থেকে রোহতকের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউটে (পিজিআই) দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু হচ্ছে। তার আগে উপাচার্য ওপি কালরা সংবাদসংস্থা এএনআইকে বলেন, ‘ভারত বায়োটেকের থেকে ওদের টিকার দ্বিতীয় পর্যায়ের হিউম্যান ট্রায়াল শুরুর অনুমতি পেয়েছি আমরা। আমাদের ৩০০ জন স্বেচ্ছাসেবক আছেন। তাঁদের বয়স ১২ থেকে ৬৫-এর মধ্যে। ১৫ জনের স্ক্রিনিং সম্পূর্ণ হয়েছে।’
জাইডকোভ ডি (ZydCov D)
ভারতের অপর ‘ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট’ তৈরি করছে ভারত বায়োটেকের জাইডাস ক্যাডিলা। সেই সম্ভাব্য টিকার নাম জাইডকোভ ডি (ZydCov D)। সেটিরও দ্বিতীয় পর্যায়ের হিউম্যান ট্রায়াল চলছে।
সম্প্রতি নীতি আয়োগের সদস্য বিনোদ কে পাল জানান, সেই জাইডাস ক্যাডিলার ‘ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট’ আপাতত মানবদেহে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। তা দ্বিতীয় পর্যায়ে আছে।
চ্যাডক্স১-এস (ChAdOx1-S০)
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং সুইডিশ-ব্রিটিশ বায়োটেক সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকা যৌথভাবে সেই সম্ভাব্য টিকা তৈরি করেছে। বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তের মতো ভারতেও সেটির তৃতীয় পর্যায়ের চলছিল। দিনকয়েক আগেই কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছিল, মহারাষ্ট্র-সহ কয়েকটি রাজ্যে সেই ট্রায়াল চলছে।
কিন্তু অ্যাস্ট্রাজেনেকা চূড়ান্ত পর্যায়ের ট্রায়াল স্থগিত রাখায় বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ভারতেও অক্সফোর্ডের ‘ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট’-র মানবদেহে পরীক্ষা-নিরীক্ষা বন্ধ রাখতে হবে। যদিও বিষয়টি নিয়ে টিকা উৎপাদনকারী সংস্থা সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার (এসআইআই) তরফে এখনও পর্যন্ত সরকারিভাবে কিছু জানানো হয়নি।