প্রাণীদের দেহে ভারত বায়োটেকের ‘ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট’ কোভ্যাক্সিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ সফল হয়েছে। ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, ভারতে প্রথম পর্যায়ের ক্লিনিকাল ট্রায়ালে টিকার ‘দুর্দান্ত অনাক্রম্যতা এবং প্রতিরোধী কার্যকারিতা’-র প্রমাণ মিলেছে।
ভারতের ১২ টি প্রতিষ্ঠানে এই ‘ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট’-এর পরীক্ষা চলছে। যা যৌথভাবে তৈরি করেছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) এবং ভারত বায়োটেক। হায়দরাবাদের সদর দফতর থাকা সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, স্তন্যপায়ীদের (বাঁদর, হনুমান গোত্রের প্রাণী) উপর চালানো পরীক্ষার মাধ্যমে ‘ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট’-এর অনাক্রম্যতা প্রমাণিত হয়েছে।
শুক্রবার ভারত বায়োটেকের তরফে একটি টুইটবার্তায় বলা হয়, 'গর্ব সহকারে প্রাণীদের উপর কোভ্যাক্সিনের পরীক্ষার ফল ঘোষণা করছে ভারত বায়োটেক। সেই ফলাফলে জীবন্ত ভাইরাস চ্যালেঞ্জ মডেলে প্রতিরোধী কার্যকারিতার বিষয়টি স্পষ্টভাবে ফুঠে উঠছে।’
দেখুন করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য টিকা সংক্রান্ত খবর
ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, বানরের (rhesus macaques) দেহে একটি নিষ্ক্রিয় Sar-CoV-২ টিকা (বিবিভি১৫২) বা কোভ্যাক্সিনের প্রতিরোধী কার্যকারিতা এবং অনাক্রম্যতার মূল্যায়ন করা হয়েছে। ২০ টি বানরকে সমভাবে চার ভাগে ভাগ করা হয়েছিল। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘একটি গ্রুপকে প্লাসেবো দেওয়া হয়েছিল এবং অন্য তিনটি গ্রুপের (বানরদের দেহে) শূন্য থেকে ১৪ দিনের মধ্যে তিনটি ভিন্ন ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট প্রয়োগ করা হয়েছিল। দ্বিতীয় ডোজের ১৪ দিন পর সব বানরদের (macaques) Sar-CoV-২ চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলা হয়েছিল। Sar-CoV-২ ভিত্তিক আইজিজি (IgG বা একধরনের অ্যান্টিবডি) বৃদ্ধি এবং টিকা প্রদানের পর তৃতীয় সপ্তাহ থেকে অ্যান্টিবডি টিটার নিষ্ক্রিয় করার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিরোধী কার্যকারিতা প্রত্যক্ষ করা গিয়েছিল।’
সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, যে গ্রুপগুলিকে টিকা প্রদান করা হয়েছিল, সেই বানরদের ‘হিস্টোপ্যাথোলজিকাল’ পরীক্ষায় (কোনও রোগের উপসর্গ এবং বৈচিত্র চিহ্নিত করার জন্য মাইক্রোস্কোপের তলায় দেহের কোষের পরীক্ষা) নিউমোনিয়ার কোনও প্রমাণ মেলেনি। তবে প্লাসেবো গ্রুপের ইন্টারস্টিটিয়াল নিউমোনিয়া-সহ ফুসফুস সংক্রান্ত বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ধরা পড়েছে। ভারত বায়োটেকের তরফে বলা হয়েছে, ‘সর্বোপরি ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেটের ফলে মজবুত প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। এভাবে অধিক পরিমাণে সক্রিয় Sar-CoV-২ ভাইরাসের প্রভাব পড়া সত্ত্বেও স্তন্যপায়ীদের (বাঁদর, হনুমান গোত্রের প্রাণী) সংক্রমণ এবং রোগ থেকে রক্ষা করা যায়।’