একাধিকবার কেন্দ্র জানিয়েছে, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই করোনাভাইরাসের টিকা মিলতে পারে। কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে কোনও কার্যকরী করোনা প্রতিষেধক মিলবে না বলে ধরে নেওয়া উচিত। তাই বৃথা আশা না দেখানোর পরামর্শ দিলেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং চিকিৎসকরা। তাঁদের মধ্যে আছেন এইমস এবং করোনা নিয়ে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের (আইসিএমআর) জাতীয় টাস্ক ফোর্সের সদস্যরাও।
ইন্ডিয়ান পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন (আইপিএইচএ), ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অফ প্রিভেনটিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিন (আইএপিএসএম) এবং ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অফ এপিডেমিয়োলজিস্টের (আইএই) বিশেষজ্ঞরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। তাতে জানিয়েছেন, করোনার প্রতিকার নিয়ে আশাবাদী হলেও খারাপতম পরিস্থিতির কথা ভেবে প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কৌশল তৈরি রাখা উচিত।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ‘বর্তমান সময় যে মহামারী চলছে, তা নিয়ন্ত্রণে টিকার কোনও ভূমিকা নেই। তবে যখন তা পাওয়া যাবে, তখন স্বাস্থ্যকর্মী এবং কোমর্বিডিটি-সহ প্রবীণদের মতো বেশি ঝুঁকিপূর্ণ মানুষকে ব্যক্তিগত সুরক্ষা দিতে কোনও ভূমিকা পালন করতে পারে টিকা। অদূর ভবিষ্যতে একটি কার্যকরী টিকা না পাওয়া যাবে বলেই ধরে নেওয়া উচিত। এই ওষুধ খুব কাছেই আছে - সেই বৃথা আশার যে বুনোট আছে, তা আমাদের অবশ্যই এড়িয়ে যেতে হবে।’
পাশাপাশি যৌথ বিবৃতিতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার একাধিক খামতিও তুলে ধরা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আইনশৃঙ্খলা জনিত নয়, করোনা মহামারী হল জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অসাম্যের কারণে দ্রুত পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। সহানুভূতি এবং যুক্তিসংগত সামাজিক অংশগ্রহণের মাধ্যমে সেই মহামারীর মোকাবিলা করা উচিত বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
তাঁদের দাবি, স্থানীয়ভাবে পরিসংখ্যান পর্যালোচনার জন্য জেলা ও রাজ্যস্তরের মহামারীবিদ বা এপিডেমিয়োলজিস্টদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই বিশ্লেষণের উপর নির্ভর করে নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। কিন্তু সেই কাজে বড়সড় ফাঁক থেকে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ‘বাজে বেতন কাঠামোর কারণে এই পদগুলির অধিকাংশই ফাঁকা পড়ে আছে। জরুরি ভিত্তিতে সেগুলিকে বিশেষজ্ঞ পদ হিসেবে ঘোষণা করার প্রয়োজনীয়তা আছে। যেখানে কমিউনিটি মেডিসিন বা প্রিভেনটিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিন এমডি ডিগ্রি লাগবে এবং যোগ্যদের নিয়োগ করতে হবে।’