আগে ভারতে করোনাভাইরাসের টিকা প্রদান করা হবে। তারপর কোভ্যাক্সভুক্ত দেশগুলিতে টিকা পাঠানো হবে। শনিবার একথাই জানালেন সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার (এসআইআই) সিইও আদর পুনাওয়ালা।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং অ্যাস্ট্রোজেনেকা যৌথভাবে যে 'ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেন্ট’ তৈরি করেছে, সেটির উৎপাদন করছে সেরাম। আগামী দু'সপ্তাহের মধ্যে সেই সম্ভাব্য টিকার জন্য জরুরি ভিত্তিতে আবেদন চাওয়ার তোড়জোড় চলছে। আর অনুমোদন মিললে প্রাথমিকভাবে ভারতেই টিকা বণ্টন করা হবে বলে জানিয়েছেন পুনাওয়ালা। তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ভারতে টিকা বণ্টন করা হবে। তারপর আমরা কোভ্যাক্স দেশগুলির উপর নজর দেব। যেগুলি মূলত আফ্রিকায় অবস্থিত। ব্রিটেন এবং ইউরোপের বাজারের দেখভাল করছে অ্যাস্ট্রোজেনেকা এবং অক্সফোর্ড। ওদের যদি উৎপাদন বাড়াতে হয়, তাহলে ওদের সমর্থন করার জন্য আমরা সর্বদা আছি। ভারত এবং কোভ্যাক্সকে আমরা অগ্রাধিকার দিচ্ছি।’
তবে টিকা কেনার বিষয়ে ভারত সরকারের সঙ্গে এখনও কোনও চুক্তি হয়নি বলে জানিয়েছেন পুনাওয়ালা। তিনি বলেন, ‘ওরা (কেন্দ্র) কত ডোজ কিনবে, তা নিয়ে এখনও লিখিতভাবে আমাদের কাছে কিছু নেই। তবে (কেন্দ্রীয়) স্বাস্থ্য মন্ত্রক যা ইঙ্গিত দিয়েছে, তাতে আগামী বছরের জুলাইয়ের মধ্যে ৩০-৪০ কোটি ডোজ লাগবে ওদের (কেন্দ্রের)।’ একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, অন্যান্য সম্ভাব্য টিকার মতো অত্যধিক ঠান্ডায় অক্সফোর্ডের 'ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেন্ট’ রাখতে হবে না। বরং সাধারণ ফ্রিজের ঠান্ডায় সেই সম্ভাব্য টিকা স্থানান্তর করা যাবে।
গত সোমবার ব্রিটিশ-সুইডিশ ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার তরফে বলা হয়েছিল, ‘ব্রিটেন ও ব্রাজিলে এজেডডি১২২২-এর (AZD1222 তথা সম্ভাব্য টিকা) যে ক্লিনিকাল ট্রায়াল চালানো হয়েছে, তার প্রাথমিক মূল্যায়নে উচ্চপর্যায়ের ইতিবাচক ফলাফল মিলেছে। তাতে কোভিড-১৯ রুখতে টিকার উচ্চপর্যায়ের কার্যকারিতার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।’ একইসঙ্গে ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারী কোনও স্বেচ্ছাসেবকের শারীরিক অবস্থার গুরুতর অবনতি হয়নি এবং কাউকে হাসপাতালে ভরতি করার প্রয়োজন হয়নি বলেও দাবি করা হয়েছিল।
গড়ে ৭০ শতাংশ হলেও একটি ডোজের ক্ষেত্রে কার্যকারিতার মাত্রা ৯০ শতাংশের মতো বলে জানিয়েছিল অ্যাস্ট্রোজেনেকা। বিবৃতিতে জানানো হয়েছিল, যখন সম্ভাব্য টিকার একটি ডোজের ধরণ (এন=২,৭৪১) দেওয়া হয়েছে, তখন ৯০ শতাংশ কার্যকারিতার প্রমাণ মিলেছে। সেক্ষেত্রে অর্ধেক ডোজ দেওয়া হয়েছিল। কমপক্ষে এক মাসের ব্যবধানে পুরো ডোজ দেওয়া হয়েছিল। আর দ্বিতীয় ক্ষেত্রে ৬২ শতাংশ কার্যকরী হয়েছে সম্ভাব্য করোনা টিকার ডোজের ধরণ (এন=৮,৮৯৫)। সেক্ষেত্রে কমপক্ষে ব্যবধানে পূর্ণ ডোজ দেওয়া হয়েছিল। অ্যাস্ট্রোজেনেকার তরফে জানানো হয়েছিল, ‘দুটি ডোজের মিলিত ফলাফলে গড়ে ৭০ শতাংশ কার্যকারিতার প্রমাণ মিলেছে।’