অবশেষে পূরণ হল লক্ষ্যমাত্রা। দৈনিক ১০ লাখ করোনাভাইরাস পরীক্ষার যে লক্ষ্য নেওয়া হয়েছিল, তা শুক্রবার পার করল ভারত। তারইমধ্যে ভারতে করোনায় সুস্থতার বেড়ে হার দাঁড়াল ৭৪.৬৯ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শনিবার সকাল আটটা পর্যন্ত দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২,৯৭৫,৭০১। তার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৯,৮৭৮ জন নয়া আক্রান্তের হদিশ মিলেছে। ওই সময়ের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৯৫৩ জনের। তার ফলে দেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৫,৭৯৪।
গত সপ্তাহের প্রথম দিকে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ার পর আবারও সেই সংখ্যাটা বাড়ছে। তা সত্ত্বেও আশার আলো দেখাচ্ছে সুস্থতার সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৩,৬৩১ জন রোগী সুস্থ হয়ে ওঠায় দেশে করোনা মুক্ত হয়েছেন মোট ২,২২২,৫৭৭ জন। একইসঙ্গে দৈনিক নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা ১০ লাখের গণ্ডি পেরিয়ে যাওয়ায় আশাবাদী কেন্দ্র। ‘হিন্দুস্তান টাইমস’-এ একটি সাক্ষাৎকারে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন জানিয়েছেন, লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য যে সময় ধার্য করা হয়েছিল, তার কমপক্ষে ছ'সপ্তাহে আগেই মাইলস্টোন পেরিয়ে গিয়েছে ভারত। করোনা আবহে সেই ‘অগ্রগতি’-তে অত্যন্ত খুশিও স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
তারইমধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানিয়েছে, ধাপে ধাপে করোনার টিকা বণ্টন করা হবে। প্রথম দফায় নির্দিষ্ট অনুপাতে সব দেশের মধ্যে করোনার প্রতিষেধক বণ্টন করতে হবে। দ্বিতীয় দফায় জনসংখ্যার ঝুঁকির মাত্রা নির্ধারণ করে টিকা দিতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেডরোস ঘেবরেসাস বলেছেন, ‘কোভ্যাকস পরিকল্পনার (টিকা বণ্টনের ক্ষেত্রে সমতা) আওতায় আমরা দু'টি ধাপে টিকা বণ্টনের প্রস্তাব দিয়েছি। সামগ্রিকভাবে বিপদের মাত্রা হ্রাস করতে প্রথম দফায় সব দেশকে নির্দিষ্ট অনুপাতের ভিত্তিতে ডোজ দেওয়া হবে। দ্বিতীয় দফায় ঝুঁকির বিষয়টি মাথায় রেখে দেশগুলিকে বিবেচনা করা হবে।’
টেডরোস জানিয়েছেন, প্রথমসারির স্বাস্থ্যকর্মী, ৬৫ বছরের উর্ধ্বে নাগরিক এবং যাঁদের ঝুঁকির মাত্রা বেশি, টিকা প্রদানের ক্ষেত্রে তাঁরা অগ্রাধিকার পাবেন। প্রথম দফায় ২০ শতাংশ মানুষ (যাঁরা সবথেকে ঝুঁকির মুখে আছেন) টিকা পাবেন বলে জানিয়েছেন হু প্রধান। তাঁর বক্তব্য, বিশ্বের সর্বত্র এবং একই সময়ে সেই সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের রক্ষা করতে না পারলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরিয়ে আনা যাবে না। বিশ্ব অর্থনীতিও ঘুরে দাঁড়াবে না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বক্তব্য, ধনী দেশগুলিই সব টিকা কুক্ষিগত করবে, বাকি দেশগুলি সেই সুযোগ পাবে না, এমন পরিস্থিতি যাতে না তৈরি হয়, সেই লক্ষ্যই নেওয়া হচ্ছে। টেডরোসের বক্তব্য, পার্সোনাল প্রোটেক্টিভ ইক্যুপমেন্টের (পিপিই) মতো টিকার ক্ষেত্রেও যেন ভুল না করে বিশ্বের অর্থবান দেশগুলি।