কোভিড প্রতিষেধক ভ্যাক্সিন নিলে মানুষ কুমিরে রূপান্তরিত হয় এবং মহিলাদের দাড়ি গজায়। ফাইজার-বায়োএনটেক সংস্থার তৈরি টিকা সম্পর্কে এমনই মন্তব্য করলেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট খেয়ার বোলসোনারো।
২০১৯ সালের শেষে বিশ্বে করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে তাকে আমলই দিতে চাননি বোলসোনারো। সেই সময় তিনি Covid-19 উপসর্গকে ‘সাধারণ ফ্লু-এর চেয়ে সামান্য বেশি’ বলে বর্ণনা করেছিলেন। চলতি সপ্তাহেও তিনি কোনও দিন এই টিকা নেবেন না বলে ঘোষণা করেছেন। তবে জনস্বার্থে দেশজুড়ে গণটিকাকরণ প্রক্রিয়া চালু করার কথাও তিনি জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার ব্রাজিলে কোভিড ভ্যাক্সিন চালুর ঘোষণা করে প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ফাইজারের সঙ্গে চুক্তিতে বিষয়টি পরিষ্কার বলা হয়েছে: আমরা কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জন্য দায়ী নই। অর্থাৎ, যদি আপনি কুমিরে রূপান্তরিত হয়ে যান, সেটা আপনার সমস্যা।’
উল্লেখ্য, ও ব্রিটেনের পরে গত কয়েক সপ্তাহ জুড়ে ব্রাজিলে ফাইজার-বায়োএনটেক সংস্থার তৈরি কোভিট টিকার ট্রায়াল চলেছে।
বোলসোনারো বলেন, ‘আপনি যাদি অতিমানব হয়ে যান, যদি কোনও মহিলার দাড়ি গজায় অথবা কোনও পুরুষ নারীসুলভ কণ্ঠস্বরে কথা বলতে শুরু করেন, তাতে ওদের কিছু যায় আসে না।’
বোলসোনারো আরও জানিয়েছেন, ব্রাজিলে সবাইকে বিনামূল্যে কোভিড টিকা দেওয়া হলেও তা বাধ্যতামূলক হবে না। যদিও ওই দিনই দেশের সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে, ব্রাজিলে টিকারণ প্রক্রিয়া চালু করা আবশ্যিক হলেও তা জোর করে মানুষের উপরে প্রয়োগ করা যাবে না। অর্থাৎ, টিকা না নিলে প্রয়োজনে প্রশাসন জরিমানা করতে পারবে এবং নির্দিষ্ট প্রকাশ্য স্থানে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করতে পারবে, কিন্তু কখনই টিকা নিতে বাধ্য করতে পারবে না।
ব্রাজিলের ২১২.২ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে এ পর্যন্ত প্রায় ১,৮৫,০০০ জন কোভিড সংক্রমণে মারা গিয়েছেন। সংক্রমিত হয়েছেন মোট ৭১ লক্ষ নাগরিক।
প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, সরকারি অনুমোদন সাপেক্ষে প্রত্যেক আগ্রহী নাগরিককে টিকা দেওয়া হবে। কিন্তু আমি টিকা নেব না। কেউ কেউ বলছেন, আমি খারাপ উদাহরণ তৈরি করছি। কিন্তু যে সব নচ্ছার ও বোকা এই সব কথা বলছে, তাদের বলছি, আমি এর আগেই সংক্রমিত হয়েছি। তার মানে, আমার শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে গিয়েছে। তা হলে কেন টিকা নেব?
একবার কোভিড সংক্রমিত হওয়ার পরে অল্প সংখ্যক মানুষ ফের সংক্রমিত হয়েছেন, এমন উদাহরণ ইতিমধ্যেই পাওয়া গিয়েছে। এই কারণে, দ্বিতীয় বার সংক্রমিত হওয়ার বিষয়টি উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। যেমন বলা যাচ্ছে না, সংক্রমণ থেকে সেরে উঠলে শরীরে অ্যান্টিবডি সক্ষম থাকার মেয়াদ কত হবে।
গত জুলাই মাসে খেয়ার বোলসেনারো করোনাভাইরাস সংক্রমিত হন। তিন সপ্তাহের মধ্যে তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন। বর্তমানে ব্রাজিলে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ এসেছে। ইতিমধ্যে ব্রাজিল সরকারের টিকারণ নীতিতে গাফিলতি ও ঢিলেমির অভিযোগ উঠেছে।