কো-উইন অ্যাপে সমস্যার কারণে আগামী সোমবার পর্যন্ত মহারাষ্ট্রে বন্ধ থাকছে করোনাভাইরাস টিকাকরণ প্রক্রিয়া। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের তরফে এমনটাই জানানো হয়েছে।
শনিবার টিকাকরণ প্রক্রিয়ার প্রথম দিনে মহারাষ্ট্রে ২৮,৫০০ জন করোনা যোদ্ধাকে টিকা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সারাদিনে মাত্র ৬৪.৩৪ শতাংশ বা ১৮,৩৩৮ জন টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন। স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের দাবি, কো-উইন অ্যাপে প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সমস্যার মুখে হয়েছিল। সঙ্গে টিকা নেওয়ার বিষয়ে অনেকের শঙ্কাও ছিল। তার জেরে মহারাষ্ট্রে তুলনামূলকভাবে টিকা প্রাপকের সংখ্যা কম হয়েছে।
মহারাষ্ট্রের নাসিক ডিভিশনের সহ-অধিকর্তা পিডি গন্দাল বলেন, 'সার্ভারের গতি কমে গিয়েছিল। তার জেরে আমাদের ডিভিশনের অনেক কেন্দ্রে তথ্য আপলোড করতে সমস্যা হচ্ছিল।' তার জেরে সেখানে হাতেকলমেই তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছিল। আরও কয়েকটি বিক্ষিপ্ত প্রান্ত থেকেও কো-উইন অ্যাপের বিভ্রাটের খবর মিলেছে। সেই পরিস্থিতিতে সোমবার (১৮ জানুয়ারি) পর্যন্ত সমগ্র রাজ্যে টিকাকরণ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আবার মঙ্গলবার থেকে টিকা প্রদান করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা।
তবে শুধু মহারাষ্ট্রে নয়, বাংলা, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান এবং উত্তরাখণ্ডের কয়েকটি জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে কো-উইন অ্যাপ ব্যবহারের সময় সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে। বঙ্গে মুর্শিদাবাদের কান্দি, দক্ষিণ ২৪ পরগনার মতো কয়েকটি জায়গায় কেন্দ্রের কো-উইন অ্যাপে বিভ্রাট দেখা দিয়েছিল। স্বাস্থ্য কর্তারা জানিয়েছেন, জেলার কয়েকটি কেন্দ্রে কো-উইন অ্যাপে তথ্য আপলোডের ক্ষেত্রে বাড়তি সময় লেগেছে। মুর্শিদাবাদের কান্দি মহকুমা হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, ‘যাঁরা টিকা পাচ্ছেন, তাঁদের তথ্য (অ্যাপে) আপলোড করার কথা ছিল। কিন্তু অ্যাপটি এত ঢিমেতালে কাজ করছে যে অনেক সময় লাগছে। বাকি সব ঠিকঠাক আছে।’ একই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি হাসপাতালও। সেখানকার এক চিকিৎসক বলেন, ‘অ্যাপ খুলছে না। বারবার লগ-ইন, লগ-আউট করতে হচ্ছে। অত্যন্ত ঢিমেতালে চলছে। হাতকলমে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।’
তবে বিক্ষিপ্ত গোলযোগ ছাড়া নির্বিঘ্নেই মহারাষ্ট্রে টিকাকরণ কর্মসূচির প্রথম দিন কেটেছে। টিকা নেওয়ার পর ১০ জনের মৃদু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (টিকাকরণের পর বিরূপ প্রতিক্রিয়া) দেখা দিয়েছে। তবে কোনওক্ষেত্রেই টিকা প্রাপকের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়নি। আপাতত মহারাষ্ট্রে ২৮ দিনের টিকা সংরক্ষিত আছে। প্রয়োজনের ভিত্তিতে যত দ্রুত সম্ভব আরও টিকা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে রাজ্য সরকার।