দেশজুড়ে করোনাভাইরাসের টিকা এবং ওষুধের আকাল নিয়ে উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছে। সেই পরিস্থিতিতে দেশে টিকাকরণ প্রক্রিয়ায় অগ্রগতি এবং রেমডিসিভিরের মতো ওষুধের মতো করোনা চিকিৎসায় প্রাপ্যতা নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের পর্যালোচনা বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার আশঙ্কার মধ্যেই আগামী কয়েক মাসে দেশে কীভাবে টিকার উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায়, সে বিষয়টিও পর্যালোচনা করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের থেরে জারি করা বিবৃতিতে জানানো হয়, বৈঠকে আধিকারিকদের মোদী নির্দেশ দেন যে ‘লকডাউন সত্ত্বেও নাগরিকদের টিকাকরণ প্রক্রিয়া জারি রাখতে হবে এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের কোনওভাবেই অন্য কাজে দেওয়া যাবে না।’ বিভিন্ন রাজ্যে কত টিকার ডোজ নষ্ট হয়েছে, তাও মোদীকে জানানো হয়। একইসঙ্গে আধিকারিকরা বলেন, ‘রাজ্যগুলিতে ১৭.৭ কোটি করোনা টিকা পাঠানো হয়েছে। ৪৫ বছরের ঊর্ধ্বে প্রায় ৩১ শতাংশ মানুষকে কমপক্ষে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে। ’
বৃহস্পতিবারের বৈঠকে হাজির ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং-সহ একাধিক উচ্চপদস্থ আধিকারিক। দেশে করোনাভাইরাসের আরও ছড়িয়ে না পড়ে, সেজন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। ১২ টি রাজ্যে যে এক লাখের সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি, সে বিষয়েও জানানো হয় তাঁকে। সেই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নতির জন্য রাজ্যগুলিতে সাহায্য করার নির্দেশ দিয়েছেন। তারপর মোদী জানান, যে জেলাগুলিতে হাসপাতালের ৫৬০ শতাংশের বেশি শয্যা পূর্ণ হয়ে গিয়েছে, সেখানে টিকাকরণের গতি যেন হ্রাস না পায়, তাও নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন মোদী।
তারইমধ্যে বৃহস্পতিবার কার্যকারীভাবে সেই আগাম বিপদের মোকাবিলার জন্য আজ থেকেই কেন্দ্র এবং রাজ্যগুলিকে প্রস্তুতি শুরুর নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেইসঙ্গে তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার আগেই শিশুদের টিকাকরণ শেষের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দিল্লি হাইকোর্টের জারি করা শোকজ নোটিশের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের দায়ের করা মামলায় বুধবার বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি এমআর শাহের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, যদি এখন থেকেই প্রস্তুতি সেরে রাখা হয়, তাহলে হয়তো তৃতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলা করা যাবে। আর সেটার জন্য বৈজ্ঞানিক পরিকল্পনার মাধ্যমে টিকাকরণ করতে হবে। শীর্ষ আদালত বলেছে, ‘বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতে (করোনার) তৃতীয় ঢেউ সামনেই আসছে। যা শিশুদের উপর প্রভাব ফেলবে। একটি শিশু যখন হাসপাতালে যাবে, তখন তার মা এবং বাবাকেও যেতে হবে। তাই এই শ্রেণিরও টিকাকরণ করতে হবে। বৈজ্ঞানিক উপায়ে আমাদের টিকাকরণের জন্য পরিকল্পনার প্রয়োজন আছে এবং সেরকমভাবে প্রস্তুতি সারতে হবে।’