কবে থেকে ভারতে টিকাকরণ প্রদান করা হবে? তা নিয়ে জল্পনা চলছিল। বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্নও উঠছিল। অবশেষে চূড়ান্ত হল দেশে করোনাভাইরাস টিকা প্রক্রিয়া শুরুর দিনক্ষণ। কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ১৬ জানুয়ারি (শনিবার) থেকে ভারতে করোনা টিকা প্রদান করা হবে।
গত রবিবার (৩ জানুয়ারি) জরুরি ভিত্তিতে সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া (এসআইআই) এবং ভারত বায়োটেককে করোনা টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছেন ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই) ভি জে সোমানি। তারপর থেকেই প্রশ্ন উঠছিল, কবে ভারতে টিকা প্রদান শুরু হবে।
কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, করোনা টিকাকরণ প্রক্রিয়ার জন্য সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের কতটা প্রস্তুত আছে, তা পর্যালোচনার জন্য শনিবার উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৈঠকে হাজির ছিলেন ক্যাবিনেট সেক্রেটারি রাজীব গৌবা, প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি পি কে মিশ্র, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ-সহ কেন্দ্রের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। সেখানেই ১৬ জানুয়ারি থেকে টিকাকরণ প্রক্রিয়া শুরু করার উপর চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে প্রায় ৩০ কোটি মানুষকে টিকা প্রদান করা হবে। সর্বপ্রথম টিকা পাবেন প্রায় তিন কোটি স্বাস্থ্যকর্মী-সহ প্রথমসারির করোনাভাইরাস যোদ্ধারা। তারপর পঞ্চশোর্ধ্ব মানুষ এবং কো-মর্বিডিটি থাকা ৫০ বছরের থেকে কম বয়স্ক মানুষকে টিকা প্রদান করা হবে।
আগামী শনিবার থেকে করোনা টিকা প্রদান শুরু হলেও ইতিমধ্যে দু'দফায় দেশব্যাপী ‘ড্রাই রান’ বা টিকাকরণ প্রক্রিয়ার মহড়া চলেছে। প্রাথমিকভাবে গত ডিসেম্বরের শেষের দিকে দেশের চার প্রান্তে মহড়া চালানো হয়েছিল। তারপর নয়া বছরের শুরুতেই সারা দেশেই টিকাকরণ প্রক্রিয়া মহড়া চলেছে। শুক্রবারও যে মহড়া দেওয়া হয়েছে। সেই মহড়ার মাধ্যমে টিকাকরণ প্রক্রিয়ায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখা হয়েছে। কোথায় কী সমস্যা, কোথায় কী কী প্রয়োজন, তা বিস্তারিতভাবে পর্যালোচনা করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
তারইমধ্যে আগামী সোমবার দেশের রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন মোদী। সূত্রের খবর, টিকা বণ্টন ও টিকাকরণের প্রক্রিয়া সংক্রান্ত খুঁটিনাটি বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে আলোচনা হবে। ড্রাই রানে অনেক জায়গায় ইন্টারনেট পরিষেবার সমস্যার বিষয়টি উঠে এসেছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকা দেওয়ার পর অ্যাপে ডেটা ইনপুট করতে হবে। কিন্তু বিহার, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে ইন্টারনেট নিয়ে সমস্যা হয়েছে। সেই নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা আছে। টিকার কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলে কীভাবে পরিস্থিতির সঙ্গে মোকাবিলা করা হবে, সেটিও আলোচনায় উঠতে পারে বলে মত সংশ্লিষ্ট মহলের।