তাহলে কি সুরক্ষার সঙ্গে আপস করে তড়িঘড়ি কোভ্যাক্সিনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে? এইমসের অধিকর্তা রণদীপ গুলেরিয়ার মন্তব্যের পর ঘুরেফিরে আসছে সেই প্রশ্ন। তিনি জানালেন, ভারতে টিকাকরণের প্রথম পর্যায়ে শুধুমাত্র কোভিশিল্ড ব্যবহার করা হবে। শুধুমাত্র জরুরি পরিস্থিতিতে কোভ্যাক্সিন ব্যবহার করা হতে পারে। এমনকী সেক্ষেত্রে কারও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলে মিলবে ক্ষতিপূরণও।
এমনিতেই রবিবার জরুরি ভিত্তিতে অনুমোদন পাওয়ার পর কোভ্যাক্সিন নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। একটি মহলের প্রশ্ন, তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরুর মাসখানেকের মধ্যেই কীভাবে অনুমোদন দেওয়া হল ভারত বায়োটেকের করোনা টিকাকে? তাহলে কি সুরক্ষার সঙ্গে আপস করা হচ্ছে? কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর তো সরাসরি বলেন, ‘কোভ্যাক্সিনের এখনও তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল হয়নি। আগেভাগে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে এবং তা বিপজ্জনক হতে পারে।’
আর সেই পর্যাপ্ত তথ্যের অভাবের দাবিতে কার্যত সিলমোহর দেন এইমসের অধিকর্তা। তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে সেরামের টিকা প্রদান করা হবে। তাদের ইতিমধ্যে পাঁচ কোটি ডোজ তৈরি আছে এবং প্রাথমিক পর্যায়ে তারা টিকা দিতে পারবে। যে পর্যায়ে আমরা তিন কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া হবে। ধাপে ধাপে আমরা (টিকার সংখ্যা) আরও বাড়াব এবং তার মধ্যে ভারত বায়োটেকের তথ্যও পাওয়া যাবে।’ সঙ্গে যোগ করেন, সেরামের বিকল্প হিসেবে কোভ্যাক্সিনকে তৈরি রাখা হচ্ছে। জরুরি পরিস্থিতিতে তা ব্যবহার করা হবে। নিউজ ১৮-এ তিনি বলেন, 'ব্রিটেনের করোনার নয়া প্রজাতির দাপট যদি হু হু করে বৃদ্ধি পায় বা ট্রায়াল শেষ হওয়ার পর - যেটা আগে হবে, তারপরই কোভ্যাক্সিনের ব্যবহার করা হবে।'
তাতেও অবশ্য উদ্বেগ কাটেনি। বিশেষত কোভ্যাক্সিনের তথ্য নিয়ে আরও বড় প্রশ্নচিহ্ন তুলে ওই সংবাদমাধ্যমে গুলেরিয়া বলেন, ‘কোভ্যাক্সিন পাওয়ার পর কারও যদি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়, তাহলে তাঁকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। যেমন ক্নিনিকাল ট্রায়ালে হয়েছে।’ তার জেরে স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি কোভ্যাক্সিনের সুরক্ষার বিষয়ে এতটাই অনিশ্চয়তা রয়েছে? আর যদি তাই থাকে, তাহলে কেন তড়িঘড়ি অনুমোদন দিল কেন্দ্র?
যদিও রবিবার সকালে ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই) ভি জে সোমানি দাবি করেছেন, 'সুরক্ষা নিয়ে ন্যূনতম উদ্বেগ থাকলেও আমরা কোনও কিছুর অনুমোদন দিতাম না। টিকাগুলি ১১০ শতাংশ সুরক্ষিত। হালকা জ্বর, ব্যথা এবং অ্যালার্জির মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া প্রতিটি টিকার ক্ষেত্রে সাধারণ বিষয়। এটা (মানুয নপুংসক হয়ে যাবেন) একেবারেই ভিত্তিহীন।'