বর্ষা প্রায় শেষের দিকে, তাও দেখা নেই ইলিশের। এবার যেন বাংলাদেশের যশোরে ইলিশ মাছের আকাল লেগেছে। স্থানীয় বাজারে দেখাই মিলছে বর্ষার রুপোলি শস্যের। যাও বা অল্পস্বল্প আসছে তার দাম এতটাই বেশি যে যশোরবাসী এবার কাঙ্খিত ইলিশের স্বাদ নিতে পারছেন না। কিন্তু কেন এমনটা হচ্ছে?
জানা গিয়েছে পদ্মা সেতু চালু হয়ে যাওয়ার পরেই দ্রুত পৌঁছে যাওয়ার সুবিধা এবং ভালো দাম পাওয়ার আশায় বরগুনা এবং ভোলা জেলার মাছ ব্যবসায়ীরা ঢাকায় যাচ্ছেন। যার জেরে বরিশাল বিভাগ থেকে যশোরে ইলিশ মাছের সরবরাহ কমেছে অস্বাভাবিক ভাবে! এই ভরা মরশুমে ভালো ইলিশ বিক্রি হবে ভেবে অগ্রিম টাকা দিয়েও মাছ পাচ্ছেন না যশোরের আড়তদাররা। পরিস্থিতি দেখে ক্রমশ নিরাশ হয়ে পড়ছেন তাঁরা। একই সঙ্গে যশোরের স্থানীয় বাসিন্দারা এবারে ইলিশের স্বাদগ্রহণের থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
অল্প বিস্তর ইলিশ যা আসছে যশোরে তার দাম আকাশছোঁয়া। ৮০০-৯০০ ওজনের মাছগুলো ১১০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হচ্ছে। কেউ আবার একটু কম ৮০০ টাকাতেও বিক্রি করছেন। আর ছোট সাইজ এবং ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকায়। এত দাম কেন জানতে চাইলে মাছ বিক্রেতারা বলছেন, আমদানি কম তাই যা আসছে তাই চড়া দামে বিকোচ্ছে।
বর্তমানে যশোরে যে দামে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে গত বছর সেই তুলনায় প্রতি কিলোতে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কমে ইলিশ পাওয়া গিয়েছিল। যশোরের আড়তদাররা বরগুনা, ভোলা জেলার পাইকারি ব্যবসায়ীদের ১ থেকে ১০ লাখ টাকা অবধি অগ্রিম দিয়েছেন কিন্তু তবুও পাচ্ছেন না ইলিশ। যার ফলে তাঁদের ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।
পদ্মা সেতু দিয়ে ইলিশ ঢাকায় চলে যাওয়া ছাড়া আরও একটি সমস্যা হল এবার সাগরে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ পাওয়া গেলেও নদীতে সেই অর্থে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। সিলেটে বন্যা হওয়ায় পলি জমে নদীর নাব্যতা কমে গিয়েছে যার কারণে মাছ সাগর থেকে নদীতে আসছে না।
ফলে, দুটো কারণ মিলিয়েই এখন যশোরবাসীরা ইলিশহীনতায় ভুগছেন। কবে এই আকাল কাটবে, আদৌ এই বছর সেই আকাল কাটবে কিনা কেউ জানে না।