সাইবার প্রতারণায় যে উচ্চশিক্ষিত মানুষজন জড়িত থাকতে পারে তা একপ্রকার কল্পনা করতে পারেননি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের অফিসাররা। এমনকী এই উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিরা নিজেদের মেধা কাজে লাগিয়ে সাইবার অপরাধ করে বেড়াচ্ছে। তাদের একটি চক্র পর্যন্ত আছে। তাদের উচ্চ–বেতন দিয়ে এই কাজ করানো হচ্ছে। আর তারাও তা করতে রাজি হচ্ছে। তাই সাইবার প্রতারণার কাজে তারা যুক্ত হচ্ছে। দিল্লি–এনসিআর এলাকায় এবার বড় সাইবার প্রতারণা চক্র ধরল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। আর তখনই এমন সব চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।
তদন্তে নেমে ইডি অফিসাররা জানতে পেরেছেন, এই সাইবার প্রতারণা চক্রে জড়িয়ে আছে চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট, কোম্পানি সেক্রেটারিশিপ পাশ করা ব্যক্তি থেকে শুরু করে ক্রিপ্টো ব্যবসায়ীরা। আর এই সাইবার প্রতারণা চক্রটি ৬৪০ কোটি টাকা রোজগার করেছে এভাবে মানুষকে ঠকিয়ে এবং প্রতারণা করে। দিল্লি–এনসিআর এলাকায় হানা দিয়ে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে ইডি। এই তিনজনের মধ্যে দু’জন চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট এবং একজন ক্রিপ্টো ব্যবসায়ী। দু’জন চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টের নাম অজয় এবং বিপিন যাদব। আর ক্রিপ্টো ব্যবসায়ীর নাম জিতেন্দ্র কাসওয়ান। তবে এই তিনজন নিয়ে সাইবার প্রতারণা চক্র নয়। এদের আরও মাথা আছে। যারা বিদেশে বসে অপারেশনটি করছে।
আরও পড়ুন: এবার এসি কোচের ভাড়া মিলবে রাজ্য সরকারি কর্মীদের, এলটিসি নিয়ে নয়া বিজ্ঞপ্তি জারি
ধৃতদের মোবাইল বাজেয়াপ্ত করার পর দেখা গিয়েছে, বিদেশ থেকে নানা বার্তা এসেছে এই তিনজনের কাছে। গত সপ্তাহে যখন ইডি অফিসাররা হানা দিয়েছিলেন তখন চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট অশোক কুমার শর্মা ব্রিজওয়াসনে তাঁর কর্মীদের ও দলবল নিয়ে হামলা করেছিলেন তদন্তকারীদের উপর বলে অভিযোগ। এরাও নানা প্রতারণার কাজের সঙ্গে যুক্ত বলে ইডির দাবি। সাইবার প্রতারণা করে টাকা হাতাতে পাঁচ হাজার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল। নানা প্রযুক্তির ছলচাতুরি করে সাধারণ মানুষের টাকা হাতিয়ে নিত জালিয়াতরা। আর টাকা পৌঁছে যেত দুবাই, আরব আমিরশাহির মতো দেশে।
এছাড়া এই জাল গোটা দেশেই সক্রিয় হয়ে রয়েছে বলে তথ্য পায় ইডি। তাই নয়াদিল্লি ছাড়াও হানা দেওয়া হয় গুরুগ্রাম, যোধপুর, ঝুনঝুনু, হায়দরাবাদ, পুণে এবং কলকাতার নানা প্রান্তে। সেখান থেকে বহু ডেবিট কার্ড, চেক বই, এটিএম কার্ড, প্যান কার্ড, ডিজিটাল সিগনেচার এবং ৪৭ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট অশোক কুমার শর্মার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। সে এখন পলাতক। তবে তার ভাই রাধেশ্যাম শর্মাকে গ্রেফতার করেছে ইডি।