দেশের ঘূর্ণিঝড়-সম্পর্কিত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করলেন। বঙ্গোপসাগরে একটি আসন্ন ঘূর্ণিঝড়ের প্রেক্ষাপটে এই বৈঠক হয়। বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপটি ৩ ডিসেম্বরের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি ৪ ডিসেম্বর সকালের মধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশার উপকূল অতিক্রম করবে বলে মনে করা হচ্ছে। সেই সময় উপকূলবর্তী এলাকায় বাতাসের গতিবেগ ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত থাকতে পারে। এই রাজ্যগুলির উপকূলীয় জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টিপাত এবং জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনাও আছে।
ঘূর্ণিঝড়টি অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলাম, বিশাখাপত্তনম এবং বিজয়নগরম জেলা এবং ওডিশার উপকূলীয় জেলাগুলিতে প্রভাব ফেলতে পারে। এর জেরে পূর্ব উপকূলীয় অঞ্চল এবং পশ্চিমবঙ্গের গাঙ্গেয় অঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।আইএমডি ওডিশার গজপতি, গঞ্জাম, পুরী এবং জগৎসিংহপুর জেলায় লাল সতর্কতা জারি করেছে (ভারী থেকে খুব ভারী বৃষ্টিপাত)। যখন ঘূর্ণিঝড় উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছবে, সেই সময়ের জন্য কেন্দ্রপাড়া, কটক, খুরদা, নয়াগড়, কান্ধমাল, রায়গড় এবং কোরাপুট জেলায় কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
সেই দিনের জন্যই বালাসোর, ভদ্রক, জাজপুর এবং মালকানগিরি জেলাতেও ভারী বৃষ্টির ইঙ্গিত দিয়ে হলুদ সতর্কতা জারি করেছে আইএমডি। ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এনডিআরএফ) অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গে ৩২টি দল মোতায়েন করেছে এবং অতিরিক্ত দলগুলিকেও স্ট্যান্ডবাইতে রাখা হচ্ছে। সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীও তাদের জাহাজ ও বিমানসহ প্রস্তুত রয়েছে। উপকূলরক্ষী বাহিনীও ইতিমধ্যেই পূর্ব উপকূলে ঘূর্ণিঝড়ের আগমনের কথা মাথায় রেখে ব্যাপক প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আজকে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে এই সব বিষয় নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের আশঙ্কায় মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল রাজ্যের মৎস্য দফতর৷ বৃহস্পতিবার তাদের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ৩ ডিসেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সমুদ্রে মাছ ধরা যাবে না৷ যাঁরা ইতিমধ্যেই সমুদ্রে চলে গিয়েছেন, তাঁদেরও বৃহস্পতিবারের মধ্যেই ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷