দিনকয়েক আগেই ভারতের পূর্ব প্রান্তে তছনছ করে দিয়েছে আমফান। সেই রেশ কাটার আগে দেশের পশ্চিম প্রান্তে ধেয়ে আসছে আরও এক ঘূর্ণিঝড় নিসর্গ। আমফানের থেকে সেটির বেগ কম হলেও কোনওরকম ঝুঁকি নিতে চাইছে না কেন্দ্র।
বরং নয় ঘূর্ণিঝড়েপ মোকাবিলায় কীভাবে প্রস্তুতি নেওয়া হবে, তা নিয়ে সোমবার একটি উচ্চ পর্যায়ের পর্যালোচনা বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ (এনডিএমএ), জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ), মৌসম ভবন এবং ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর শীর্ষ কর্তারা।
পরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতি জারি করে জানানো হয়, সেই বৈঠকের পর মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকবে এবং গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানির সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্স করেছেন শাহ। ছিলেন দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউয়ের প্রশাসক প্রফুল্ল প্যাটেল। বৈঠকে যাবতীয় কেন্দ্রীয় সাহায্যের আশ্বাস দেওয়ার পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় কী কী প্রয়োজন আছে, তাও তাঁদের বিস্তারিতভাবে জানাতে বলেন শাহ।
এদিকে, সকালের তুলনায় কিছুটা দুর্বল হয়েছে নিসর্গ। মৌসম ভবনের বুলেটিন অনুযায়ী, সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার সময় সেটি পানজিমের দক্ষিণ-পশ্চিমে ৩১০ কিলোমিটার, মুম্বইয়ের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে ৫৭০ কিলোমিটার এবং সুরাতের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে ৮০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। আগামী ১২ ঘণ্টায় সেটি অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে এবং পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় পূর্ব-মধ্য আরব সাগরের উপর তা ঘূর্ণিঝড়ের আকার ধারণ করবে। প্রাথমিকভাবে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত সেটি উত্তরদিকে যাবে। পরে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে বাঁক খেয়ে আগামী বুধবার বিকেল নাগাদ উত্তর মহারাষ্ট্র এবং দক্ষিণ গুজরাত উপকূলের হরিহরেশ্বর (মহারাষ্ট্রের রায়গড় জেলায়) এবং দমনের মধ্য দিয়ে ঘূর্ণিঝড় স্থলভূমিতে প্রবেশ করবে। সেই সময় ঝড়ের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার। কখনও কখনও তা বেড়ে ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটারে পৌঁছে যেতে পারে। সকালের বুলেটিনে জানানো হয়েছিল, ঘণ্টায় ঝড়ের গতিবেগ ১০৫ থেকে ১১৫ কিলোমিটারের মধ্যে ঘোরাফেরা করবে।
দুর্যোগের মাত্রা কিছুটা কমতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হলেও কোনওরকম ঝুঁকি নেওয়া হচ্ছে না। ইতিমধ্যে গুজরাতে ১৩ টি দল পাঠিয়েছে এনডিআরএফ। দুটি দলকে স্ট্য়ান্ড-বাই হিসেবে রাখা হয়েছে। মহারাষ্ট্রে ন'টি দলকে মোতায়েন করা হয়েছে। সাতটি দলকে রিজার্ভ হিসেবে তৈরি থাকতে বলা হয়েছে। দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউয়ে একটি করে দল মোতায়েন করেছে এনডিআরএফ। উপকূলবর্তী এলাকার নীচু এলাকা থেকে মানুষদের উদ্ধারের কাজে রাজ্য সরকারকে সাহায্য করছে তারা।