১৯৯৯-এর সুপার সাইক্লোনকেও ম্লান করে দেওয়ার ক্ষমতাযুক্ত সাইক্লোন আমফান ধেয়ে আসছে ভারত ও বাংলাদেশের দিকে। তবে হাওয়া দফতরের খবর, একটু হলেও শক্তি হারিয়েছে এই ঘুর্নিঝড়। বুধবার দুপুরে এটি ভারত ও বাংলাদেশে আছড়ে পড়বে বলে জানা যাচ্ছে। যাতে প্রাণহানি রোখা যায়, তার জন্য ইতিমধ্যেই উপকূলবর্তী এলাকা থেকে লোক সরানোর কাজ শুরু হয়েছে।
নবান্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন যে এখনও তিন লক্ষ মানুষকে সরিয়ছে প্রশাসন। অন্যদিকে পড়শি দেশও সমান সচেষ্ট। হাসিনার মন্ত্রীসভায় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত এনামুর রহমান বলেন ২২ লক্ষ মানুষকে তারা সমুদ্রতট থেকে সরিয়ে আনছেন।
ঘণ্টায় ২০০-২১০ কিলোমিটার বেগে এই সাইক্লোন আসবে যদিও সমুদ্রে এর সর্বোচ্চ গতিবেগ ২৪০ কিলোমিটার হতে পারে বলে আইএমডি জানিয়েছে। যখন সাইক্লোন ডাঙায় আছড়ে পড়বে, তখন ১৮৫ কিলোমিটার গতিবেগ থাকবে। অত্যন্ত শক্তিশালী ঘুর্নিঝড় হিসাবে দীঘা ও বাংলাদেশের হাতিয়ার মধ্যে কোনও এক অঞ্চলে এসে পড়বে।
১৯৯৯-এ সুপার সাইক্লোনে দশ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিলেন ওড়িশায়। তারপরে এত শক্তিশালী ঝড় বঙ্গোপসাগরে আসেনি বলে জানিয়েছেন আইএমডি-র ডিরেক্টর জেনারেল মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র।
বাংলাদেশ মোট ১২,০৭৮ শেল্টার হোম প্রস্তুত করেছে আমফানের জন্য। আজ থেকে ফেরি পরিষেবা সহ নদীতে চলাচল বন্ধ করেছে প্রতিবেশি রাষ্ট্র। বাংলাদেশের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষ থাকেন। তাদের রক্ষা করাই এখন প্রশাসনের একমাত্র লক্ষ্য।
অন্যদিকে ভারতে এনডিআরএফের ৪১টি দল বাংলা ও ওড়িশায় রয়েছে উদ্ধারকাজের জন্য। স্ট্যান্ডবাইতে আছে আরও ২৪টি দল। তিনটি জাহাজ সুন্দরবনে নোঙর করেছে বিএসএফ। এনডিআরএফের সঙ্গে তারাও সহযোগিতা করবে বলে জানা গিয়েছে।
বাংলায় তিন লক্ষ মানুষকে সরানো হয়েছে বলে জানিয়েছে মমতা। আগামিকাল তিনি সারা রাত নবান্নে থাকবেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।একই সঙ্গে প্রভাবিত হবে উত্তর ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর। ঝড়ের প্রভাব পড়বে কলকাতাতেও। ১৩০ কিমি বেগে মহানগরে ঝড় বইতে পারে।
ওড়িশাতেও চার জেলা- বালাসোর, ভদ্রক, জগত্সিংহপুর ও কেন্দ্রপাড়ায় ভারি ক্ষতির সম্ভাবনা আছে। মোট ১১ লক্ষ মানুষকে সরানোর পরিকল্পনা করেছে রাজ্য।