বর্তমানে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে জেরবার ভারত। ২০২০ সালের থেকেও বাজে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দেশে। ১৫ এপ্রিল থেকে রোজই দেশে ২ লক্ষের বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। এদিকে ১৪ এপ্রিল থেকে রোজই দেশে হাজারের বেশি মানুষ করোনা সংক্রমিত হয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন। এই পরিস্থিতি গত এক সপ্তাহে কীভাবে করোনা গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হল দেশে?
এই সপ্তাহের প্রথমদিন অর্থাত্, ১২ এপ্রিল দেশে করোনা আক্রান্ত হন ১ লক্ষ ৬৮ হাজার ৯১২ জন। প্রাণ হারান ৯০০ জন। পরের দিন, অর্থাত্ ১৩ এপ্রিল সংক্রমণ কিছুটা কমে। সেদিন ১ লক্ষ ৬১ হাজার ৭৩৬ করোনা আক্রান্ত হন। সংক্রমিত হয়ে মারা যান ৮৭৯ জন।
যদিও ১৪ এপ্রিল এক লাফে অনেকটাই বেড়ে যায় করোনা সংক্রমণে কেস। সেদিন করোনা আক্রান্ত হন ১ লক্ষ ৮৪ হাজার ৩৭২ জন। প্রাণ হারান ১ হাজার ২৭ জন। ১৫ এপ্রিল প্রথমবার দৈনিক সংক্রমণ ২ লক্ষের গণ্ডি ছাড়িয়ে যায়। সেদিন করোনা আক্রান্ত হন ২ লক্ষ ৭৩৯ জন। সেদিন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যায় ১ হাজার ৩৮ জন। সক্রিয় রোগীর সংখ্যা সেদিন ছিল ১ লক্ষ ৬ হাজার ১৭৩।
১৬ এপ্রিল ফের একবার ঊর্ধ্বমুখী হয় করোনা গ্রাফ। একলাফে বেড়ে দৈনিক সংক্রমণ গিয়ে দাঁড়ায় ২ লক্ষ ১৭ হাজার ৩৫৩ জন। ১৭ এপ্রিল সেই সংখ্যাটা আরও বেড়ে যায়। এই দুই দিন মিলিয়ে প্রায় ২৫০০ জন মারা যান।
এই সপ্তাহে দেশে গড় দৈনিক সংক্রমণ ছিল ১ লক্ষ ৯৪ হাজার ৬৩৪। গত সপ্তাহে মোট ৬ হাজার ৩৭৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারায়। গড়ে প্রতিদিন ১ হাজার ৬২ জন মারা গিয়েছেন। সুস্থতার হার নেমে গিয়েছে ৯০ শতাংশে।
করোনার থাবায় নাজেহাল দশা দেশের রাজধানী দিল্লির। শনিবারের হিসাব অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দিল্লিতে ২৪ হাজার নতুন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। দৈনিক আক্রান্তের হার এক ধাক্কায় বেড়ে হয়েছে ২৪ শতাংশ। সেখানে ক্রমশ কমছে করোনা রোগীদের জন্য বরাদ্দ শয্যা, অক্সিজেন এবং জীবনদায়ী ওষুধের ভাণ্ডার। এই পরিস্থিতিতে দিল্লিতে সপ্তাহান্ত লকডাউন জারি হয়েছে।
এদিকে দেশের মধ্যে সবথেকে বাজে পরিস্থিতি মহারাষ্ট্রের। গত মঙ্গলবার সেরাজ্যে ১৫ দিনের জন্য ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে। সেরাজ্যে রোজই প্রায় ৬০ হাজারের বেশি জন করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে অক্সিজেন সিলিন্ডারের ঘাটতিও দেখা দিয়েছে সেরাজ্যে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী আবেদন করতেই করোনা আবহে কুম্ভমেলা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। অতিমারির প্রকোপ রুখতেই এই উদ্যোগ বলে জানানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তরফে।
এদিকে করোনা আবহে একাধিক পরীক্ষা বাতিলের ঘোষণা করা হয়েছে। সিবিএসই তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণীর বোর্ড পরীক্ষা বাতিল করা হল। এছাড়া নিট-পিজি পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়েছে। আইসিএসসিই জানিয়েছে তাদের দশম শ্রেণীর পরীক্ষা আপাতত স্থগিত থাকছে।