দলিত 'ভোজনমাতা' র হাতের তৈরি মিড ডে মিলের রান্না স্কুলের উচ্চবর্ণের পড়ুয়ারা বয়কট করেছিল। যার জেরে ৩২ বছর বয়সী সুনীতা দেবীকে স্কুলের মিডডে মিল রান্নার কাজ থেকে ছাঁটাই করে স্কুল। উত্তরাখণ্ডের এই ঘটনা ঘিরে প্রবল সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। এলাকার শিক্ষাবিদরাও এর বিরোধিতায় নামেন। এরপর ময়দানে নামে জেলার শিক্ষা দফতর। এক সরকারি নির্দেশনামার মাধ্যমে ফের একবার কাজে ফেরানো হয় সুনীতা দেবীকে।
সিনির সেকেন্ডারি স্কুলকে ইন্টার কলেজ বলা হয়ে থাকে। তেমনই একটি ইন্টার কলেজ রয়েছে উত্তরাখণ্ডের সুখিধাং এলাকায়। যেখানে কয়েকদিন আগেই কাজে যোগ দেন ৩২ বছরের সুনীতা দেবী। দলিত এই মহিলা, স্কুলের মিড ডে মিলের রান্নার কাজের চাকরি পান। তবে তাঁর রান্না শুরু হওয়ার কয়েকদিন বাদ থেকেই দেখা যায়, স্কুলের উচ্চবর্ণের পড়ুয়ারা তাঁর রান্না বয়কট করে। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের মধ্যে এই প্রবণতা দেখা যায়। পড়ুয়াদের দাবি ছিল দলিত মহিলার হাতের রান্না তারা মুখে তুলবে না। বর্ণভেদ ইস্যুতে এমন এক করুণ ঘটনায় স্তম্ভিত হন বহু এলাকাবাসী। এরপর রাজ্য শিক্ষাবিভাগের তরফে শুরু হয় তদন্ত। দেখা যায়, সুনীতা দেবীর আবেদন পত্রে কিছু গলতি রয়েছে। আর তার জেরেই সুনীতাকে কাজ থেকে ছাঁটাই করা হয়। ২২ ডিসেম্বর সেই ঘটনার পর স্কুলে মিড ডে মিল রান্নার জন্য আসেন নতুন 'ভোজন মাতা'। এবার নিম্নবর্ণের পড়ুয়ারা উচ্চবর্ণের ভোজনমাতার হাতের রান্না খেতে অস্বীকার করে। এরপর স্থানীয় প্রশাসন নামে ময়দানে। এলাকাবাসী ও স্কুল পড়ুয়াদের অভিভাবকের সঙ্গে বসে এলাকায় সম্প্রীতি রাখার বার্তা দেয় প্রশাসন। বর্ভেদকে প্রশয় না দিয়ে এগিয়ে চলার বার্তা দেওয়া হয়।
এরপর উত্তরাখণ্ডের চম্পাওয়তের মুখ্য শিক্ষা আধিকারিক, ওই স্কুলের শিক্ষক, ম্যানেজমেন্ট ও পড়ুয়াদের অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। বৈঠকের পর সুনীতা দেবীকে কাজে পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এদিকে, সুনীতা দেবীকে জাতি-বর্ণ ইস্যুতে বিব্রত করার অভিযোগে ২৬ জনের বিরুদ্ধে প্রশাসন মামলা দায়ের করেছে। এই ২৬ জনের তালিকায় রয়েছেন একজন মহিলা। তিনি ব্লক ডেভেলপমেন্ট কমিটির সদস্য বলে জানা গিয়েছে। এসসি এসটি অ্যাক্টের আওতায় দায়ের হয়েছে এই মামলা। প্রশাসন জানিয়েছে, এই মামলার তদন্তভার থাকবে পুলিশের একজন সার্কেল অফিসারের ওপর।