মুকেশ এম
বিয়ের ক্ষেত্রে একাধিক রাজ্যে রীতি রয়েছে ঘোড়ায় চেপে বর আসে। রাজস্থানে এই রীতিকে বান্দোলি বলে উল্লেখ করা হয়। তেমনি রাজস্থানের বার্মার জেলায় মেলি গ্রামে একই পরিবারের দুই মেয়ের বিয়ে হচ্ছিল। আর সেই বিয়েতে ঘোড়ায় চেপে বর নয়, ঘোড়ায় চেপেছিলেন সেই বাড়ির দুই পাত্রী। আর এটা দেখেই ওই সম্প্রদায়ের খাপ পঞ্চায়েতের লোকজনের মাথা গরম। মেয়েরা এভাবে বিয়ের সাজে ঘোড়ায় চাপবে সেটা মানতে পারেননি তারা।
এরপর রীতিমতো সালিশি সভা বসিয়ে ফেলেন সমাজের মাতব্বররা। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় একঘরে করতে হবে ওই পরিবারকে। সেই মর্মে জারি হয় ফতোয়া। তারা জানিয়ে দেন, সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে ওই পরিবারকে। সেই সঙ্গেই ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় ওই পরিবারকে। আসলে দলিত পরিবারের কোনও কন্যা বধূবেশে ঘোড়ায় চাপবে এটা সেই সম্প্রদায়ই মানতে পারেনি। তার জেরে ভয়াবহ ফতোয়া জারি করে তারা।
শঙ্কর মেঘাওয়াল নামে ওই পরিবারের সদস্য থানায় এনিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন। তাঁর দাবি কার্যত তাদের একঘরে করে রাখা হয়েছে।
তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, ৬ ফেব্রুয়ারি তাঁর দুই বোনের বিয়ে হয়। সেখানে ঘোড়ায় চেপেছিলেন কনেরাই। তারপরই খাপ পঞ্চায়েতের লোকজন তাদেরকে একঘরে করে দিয়েছে। জরিমানা করেছে। গত ১৮ এপ্রিল এই খাপ পঞ্চায়েত বসেছিল।
মেঘাওয়াল জানিয়েছেন,আমাদের পরিবার আমার বোনেদের বান্দোলি করেছিলেন কারণ আমরা সমাজকে বোঝাতে চেয়েছিলাম সমাজে ছেলে-মেয়ে বলে আলাদা করে কোনও বিভেদ থাকা উচিত নয়। কিন্তু তারপর থেকেই সামাজিকভাবে বয়কট করা হচ্ছে আমাদের। সমাজের কেউ আমাদের সঙ্গে দেখা করছে না। আমাদের সঙ্গে কেউ কথা বলছে না। সামাজিক কোনও অনুষ্ঠানে আমাদের কেউ আমন্ত্রণ করছে না।
সিওয়ানা থানার স্টেশন হাউজ অফিসার নাথু সিং চরণ জানিয়েছেন, অভিযোগ একটা এসেছে। সেই অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে রাজস্থানের এই ঘটনা কার্যত চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে কতটা পিছিয়ে রয়েছি আমরা। যে নারী আজ মহাকাশে যাচ্ছে সেই নারীকেই বিয়ের সাজে ঘোড়ায় চাপতে দেখলে সমাজের রক্তচক্ষুর মুখে পড়তে হচ্ছে। সামাজিকভাবে বয়টক করা হচ্ছে সেই পরিবারকে।