WEST BENGAL, DARJEELING, KOLKATA : ভারতের সেরা চিড়িয়াখানার শিরোপা পেল পশ্চিমবঙ্গের এক চিড়িয়াখানা। তবে রাজ্যের চিড়িয়াখানা বলতেই সঙ্গে সঙ্গে আলিপুর চিড়িয়াখানা ধরে নেবেন না। দেশে প্রথম স্থান পেয়েছে পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুওলজিকাল পার্ক। কোথায় বলুন তো?
পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুওলজিকাল পার্ক আসলে দার্জিলিং জু নামেই বেশি পরিচিত। দার্জিলিং বেড়াতে গিয়ে অনেকেই এই চিড়িয়াখানা ঘুরতে যান। সেটাই যে দেশের এক নম্বর চিড়িয়াখানা, তা আগে জানতেন? ফলে এরপর দার্জিলিং গেলে অবশ্যই এই চিড়িয়াখানা ঘুরে আসবেন। তবে, কলকাতার আলিপুর চিড়িয়াখানাও খুব পিছিয়ে নেই।
দেশে চতূর্থ স্থানে রয়েছে কলকাতার আলিপুর জুওলজিকাল গার্ডেন। তবে মধ্য আকারের চিড়িয়াখানা ক্যাটাগরিতে আলিপুর চিড়িয়াখানা দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
দার্জিলিং চিড়িয়াখানা বিরল প্রজাতির রেড পাণ্ডার প্রজননের জন্য বিশ্বখ্যাত। এছাড়াও এটি দেশের একমাত্র চিড়িয়াখানা, যেখানে স্নো লেপার্ড ও তিব্বতি নেকড়ের প্রজনন করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে বনাঞ্চলে তাদের সংখ্যা ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। প্রজাতি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে তাই দার্জিলিং চিড়িয়াখানার গুরুত্ব অপরিসীম। তাছাড়া চিড়িয়াখানার অভ্যন্তরেই বিশাল ঘেরাটোপের মধ্যে পাথর, গাছ ইত্যাদির মাধ্যমে জন্তুদের জন্য আদর্শ প্রাকৃতির পরিবেশ গড়ে তোলা হয়েছে। সেই কারণে আরও বেশি

২০২১ ও ২০২২ সালে চিড়িয়াখানাগুলির পরিদর্শন করেন কেন্দ্রীয় আধিকারিকরা। চিড়িয়াখানার জন্তুদের স্বাস্থ্য, পরিকাঠামো, কর্মীদের প্রশিক্ষণ, দর্শকদের সুযোগ-সুবিধা, তহবিল ইত্যাদি বিষয় খতিয়ে দেখা হয়। ঘেরাটোপের মধ্যে জন্তুদের জন্য তাদের প্রাকৃতিক পরিবেশের অনুরূপ সাজানো হয়েছে কিনা, সেটিরও তদারকি করা হয়। এর পাশাপাশি প্রাণী সংরক্ষণ, প্রজনন, সুশ্রষা ও গবেষণার উপরেও নম্বর দেওয়া হয়েছিল। প্রতিটা চিড়িয়াখানা ৩-৪ দিন ধরে খুঁটিয়ে দেখেন কেন্দ্রীয় বিশেষজ্ঞরা।
দার্জিলিং চিড়িয়াখানার পরিচালক বাসবরাজ এস হোলেয়াচি বলেন, এটি শুধু আমাদেরই নয়, গোটা পাহাড়বাসীর কাছে একটি গর্বের বিষয়। আমাদের সকলের কঠোর পরিশ্রম এবং কর্মীদের নিষ্ঠার ফল এটি।
দার্জিলিং ও আলিপুর, দুই চিড়িয়াখানাই 'ভেরি গুড' রেটিং পেয়েছে।
মঙ্গলবার ভুবনেশ্বরে বিশেষ বৈঠকে কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ এই তালিকা প্রকাশ করে। দেশের চিড়িয়াখানার পরিচালকরা এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
পশ্চিমবঙ্গের চিড়িয়াখানার এই উন্নতিতে খুশি রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও। তিনি বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখানো পথে, বন দফতর আলিপুর ও দার্জিলিং চিড়িয়াখানার আধুনিকিকরণের বেশ কিছু প্রকল্প চালু করেছে। আগামিদিনে আমরা আরও বেশি করে সংরক্ষণমূলক প্রজননে জোর দেব। সেই সঙ্গে চিড়িয়াখানার দর্শকদেরও আরও সুবিধা দেওয়া হবে।
চিড়িয়াখানা মানেই খাঁচায় বন্দী প্রাণী নয়। পুরনো সংজ্ঞা থেকে বেরিয়ে আসছে বিশ্বের তাবড় চিড়িয়াখানাগুলি। আগামিদিনের চিড়িয়াখানা হবে বন্যপ্রাণীদের সুশ্রষা, সংরক্ষণ, প্রজনন, সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও আমজনতার সচেতনতা বৃদ্ধির একটি কেন্দ্র। আর সেই স্রোতেই সামিল দার্জিলিং ও আলিপুর।