আর মাত্র কিছুদিনের অপেক্ষা। তারপরই ফের একবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের কুর্সিতে বসবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নানা মহলের কৌতূহল, ট্রাম্পের সরকারের সঙ্গে পড়শি কানাডা তথা জাস্টিন ট্রুডো সরকারের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবার কোন খাতে বইবে? সেই প্রেক্ষাপটেই সামনে এল এক উদ্বেগজনক তথ্য এবং তার সঙ্গে জড়িয়ে গেলেন বিদেশে বসবাসকারী ভারতীয়দের একাংশ।
সূত্রের দাবি, গত কয়েক বছর ধরেই নাকি বেআইনিভাবে কানাডা থেকে সীমান্ত পেরিয়ে আমেরিকায় ঢুকতে শুরু করেছেন ভারতীয় নাগরিকরা। এবং সেই সংখ্যা ইদানীংকালে লাগাতার বাড়ছে!
আমেরিকা-কানাডা সীমান্তের দায়িত্ব থাকা মার্কিন শুল্ক বিভাগ এবং সীমান্ত টহলদারি বাহিনী (ইউএস কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার পেট্রল - সিবিপি)-এর হাতে এই সংক্রান্ত যে তথ্য উঠে এসেছে, তাতে বলা হচ্ছে - গত এক বছরে কানাডা থেকে আমেরিকায় অনুপ্রবেশ করতে চাওয়া ভারতীয়দের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ২২ শতাংশ। ফলত, সামগ্রিকভাবেও অনুপ্রবেশের ঘটনা বাড়ছে।
চলতি আর্থিক বছর সিবিপি যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে কানাডার সীমান্ত পেরিয়ে বেআইনিভাবে আমেরিকায় ঢোকার চেষ্টা করা হয় ১,০৯,৫৩৫ বার। এই আইনভঙ্গকারীদের মধ্যে ভারতীয়দের পরিমাণ ছিল - ১৬ শতাংশ।
২০২৩ সালে মোট ১,৮৯,৪০২ বার কানাডা থেকে আমেরিকায় অনুপ্রবেশের চেষ্টার ঘটনা সামনে আসে। যদিও তখনও পর্যন্ত ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীদের পরিমাণ আগের মতোই ১৬ শতাংশ (৩০,০১০) ছিল।
কিন্তু, ২০২৪ সালে কানাডা থেকে আমেরিকায় যাঁরা অনুপ্রবেশের অপচেষ্টা করেছেন, তাঁদের মধ্যে ভারতীয়দের পরিমাণ হঠাৎ করেই বেড়ে গিয়েছে। এবছর এখনও পর্যন্ত মোট ১,৯৮,৯২৯ বার কানাডা থেকে আইন ভেঙে আমেরিকায় ঢুকে পড়ার চেষ্টা করা হয়। যার মধ্যে ৪৩,৭৬৪ বার এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছেন ভারতীয়রা। অর্থাৎ - অভিযুক্তদের ২২ শতাংশই ভারতীয় বংশোদ্ভূত।
তবে, অবশ্যই মনে রাখতে হবে, এই হিসাবের আওতায় শুধুমাত্র তাঁদেরই রাখা হয়েছে, যাঁরা মার্কিন নজরদারি বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে গিয়েছেন। আদতে কানাডা থেকে আমেরিকায় অনুপ্রবেশকারী ভারতীয়দের সংখ্যাটা অনেকটাই বেশি বলে আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
এদিকে, দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্টের গদিতে বসার আগেই ট্রুডো সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর সাফ কথা, কানাডা যদি আমেরিকার ২৫ শতাংশের ট্যারিফের গুঁতো থেকে বাঁচতে চায়, তাহলে অবিলম্বে এই অনুপ্রবেশ সমস্যা মেটাতে হবে।
কানাডার সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, শুক্রবার আগাম কোনও ঘোষণা ছাড়াই ফ্লোরিডার মার-আ-লাগোয় আয়োজিত একটি থ্য়াঙ্কস গিভিংয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন জাস্টিন ট্রুডো। বলা হচ্ছে, বিশেষ করে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেই নাকি ট্রুডোর এই হঠাৎ সফর!
সূত্রের দাবি, এই সফরে অনুপ্রবেশ সমস্যা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। এবং আরও লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, এই সফরে ট্রুডোর সফরসঙ্গী ছিলেন কানাডার জন সুরক্ষা মন্ত্রী ডমিনিক লিব্ল্যাঙ্ক। যিনি কানাডিয়ান বর্ডার সার্ভিসের দায়িত্বে রয়েছেন।